বর্তমানে ফেসবুকসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে এক ভয়ঙ্কর প্রতারণার কৌশল—হোয়াটসঅ্যাপ Video কল ফাঁদ। অনেকেই বুঝতে না পেরে সহজেই এই ফাঁদে পা দিচ্ছেন এবং তাদের ব্যক্তিগত সম্মান, অর্থ ও মানসিক শান্তি হারাচ্ছেন।
প্রতারণা শুরু হয় সাধারণ একটি ফেসবুক ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দিয়ে। একটি মেয়ের আকর্ষণীয় প্রোফাইল থেকে রিকোয়েস্ট আসে—প্রোফাইলে থাকে ছবিসহ স্ট্যাটাস, লোকেশন লেখা থাকে মুম্বাই বা ভারতের কোনো শহর। অনেকের প্রোফাইলে পরিচিতদেরও দেখা যায়, যা দেখে বিশ্বাস জন্মায়। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার পর শুরু হয় কথোপকথন, তারপর সে চায় আপনার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর। নম্বর দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসে হঠাৎ এক ভিডিও কল।
এই ভিডিও কল রিসিভ করতেই দেখা যায়, ওপাশে চলছে অশ্লীল কনটেন্ট। আপনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেই দৃশ্য রেকর্ড করে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় আসল প্রতারণা—আপনার কাছে ভিডিও পাঠিয়ে টাকা দাবি করা হয়, বলা হয় টাকা না দিলে এটি আপনার পরিচিতজনদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
একজন ভুক্তভোগীর অভিজ্ঞতা বলছে, তিনি এই ফাঁদে পড়ে ৫১ হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন মানসম্মানের ভয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি সাইবার Crime দমন ইউনিটে অভিযোগ করে সহায়তা পান।
আইনজীবীদের মতে, এ ধরনের ঘটনা সাইবার Security Law ২০২৩ অনুযায়ী অপরাধ।
এই আইনের আওতায়:
- ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রতারণা করলে ধারা ২৪-এ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত
- বিকাশ/নগদ ইত্যাদির মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিলে ধারা ৩০ অনুযায়ী আর্থিক প্রতারণা
- ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও ছড়ালে ধারা ২৫(ক) ও ২৯ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য
করণীয়:
- দ্রুত নিকটস্থ থানায় জিডি করুন
- নম্বর, সোশ্যাল আইডি, স্ক্রিনশট, ভিডিও, লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য সংযুক্ত করুন
- জিডির অনুলিপি আদালতে পাঠালে তদন্ত শুরু হবে
- প্রয়োজনে সাইবার ক্রাইম ইউনিট বা কোনো আইনজীবীর সহায়তা নিন
ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসি জানান, অনেক ভুক্তভোগী লজ্জায় অভিযোগ করেন না, ফলে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। কিন্তু ভয় না পেয়ে দ্রুত আইনি সহায়তা নেওয়াই এ থেকে রক্ষার পথ।
সবচেয়ে বড় কথা—আপনার নীরবতা নয়, সচেতনতাই পারে আপনাকে বাঁচাতে। এই প্রতারকদের ঠেকাতে হলে চুপ না থেকে সাহসিকতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে। সামাজিক মর্যাদা রক্ষার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো প্রতারণা From মুক্ত To be and প্রতারকদের Against আইনি ব্যবস্থা নেওয়া.