ফের ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটামে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশের ৩৭ তম পাবলিক ও মেরিটাইম বিষয়ক একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির।শুরু থেকে অনেক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠলেও মৌলিক কিছু বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে এখনো অনেক দুরত্ব রয়ে গেছে।
বর্তমানে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের প্রতি সেমিস্টার বাবদ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় ২-৩ গুণ বেশি টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে।
যেখানে বুয়েট ৩ হাজার ৫০০, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ৪ হাজার ৫০০, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ৫ হাজার ৫০০, বুটেক্স ৪ হাজার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ৩ হাজার , যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ৪ হাজার, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ৪ হাজার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৪ হাজার ৫০০, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ৪ হাজার ৫০০, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ৫ হাজার, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ৫ হাজার, কুয়েট ২ হাজার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ৩ হাজার ৫০০ টাকা।সেখানে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের দিতে হচ্ছে ১২-১৪ হাজার টাকা।পর্যালোচনা করে দেখা যায় শুধুমাত্র বিইউপি ও অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফি মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির থেকে সামান্য বেশি।
বিশেষায়িত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রতি ক্রেডিট বাবদ ৩০০ টাকা দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।সে হিসেবে প্রতি সেমিস্টারে ক্রেডিট ফি বাবদ ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধ করতে হয়।এছাড়া পরীক্ষা ফি বাবদ পরিশোধ করতে হয় ১ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। অন্যান্য ফি হিসেবে এডুকেশন এন্যান্সমেন্ট ফি ১ হাজার টাকা, স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ফি ১ হাজার টাকা, ক্লাব ফি ৩০০, গ্রেড শিট ফি ৩৫০, আইসিটি সার্ভিস ফি ৩০০, লাইব্রেরি ফি ৬০০, মেডিকেল ফি ৫০০, স্পোর্টস ফি ১২৫ ও ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজমেন্ট ফি ৮০০ টাকা নেওয়া হয়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বৈষম্যহীন বাংলাদেশের অংশ হিসেবে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি দাওয়া উপস্থাপন করে আসছিলো।যার মধ্যে অন্যতম দাবি ছিলো অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সেমিস্টার ফি কমানো,বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা।কিন্তু কর্তৃপক্ষের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেও কোন সমাধান না আসায় এবার ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
আল্টিমেটামে শিক্ষার্থীরা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন ও সেমিস্টার ফি কমানোর জন্য গত প্রায় ৪ মাস যাবত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের দফায় দফায় বৈঠক হয় এবং সর্বশেষ ১৫ ডিসেম্বর মাননীয় উপাচার্য মহোদয় আশ্বাস প্রদান করেন যে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের দাবীর বাস্তবায়ন হবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকেও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায় নি এবং ন্যায্য দাবি দ্রুত বাস্তবায়নে অবহেলা দৃশ্যমান।
শিক্ষার্থীরা দ্রুত নাম পরিবর্তন এবং চলমান সেমিস্টার থেকেই ফি হ্রাসের দাবি জানালেও প্রায় ১মাস অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউজিসি থেকে স্পষ্ট ও জোড়ালো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি। এমতাবস্থায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক, আগামী ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ অব্দি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ইউজিসি-এর কাছে নাম পরিবর্তন ও সেমিস্টার ফি কমানোর স্পষ্ট পদক্ষেপ উপস্থাপন করার সময় বেঁধে দেয়া হলো।
অর্থাৎ আগামী ১৩ই জানুয়ারি ২০২৫ এর ভেতর (৪৮ ঘণ্টা) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ইউজিসি উক্ত দুই দাবির স্পষ্ট বাস্তবায়ন নিশ্চিত না করলে ১৪ই জানুয়ারি ২০২৫ (মঙ্গলবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে “মার্চ টু ইউজিসি” কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।