শিরোনাম
কালীগঞ্জে পৌষ সংক্রান্তির ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা অনুষ্ঠিত   » «    ফ‍্যাসিবা আ’ওয়ামী সরকারের সকল মামলায় খালাস “বাবর” মদনে আনন্দ মিছিল   » «    দৌলতপুরে ইউসুফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি এলমেচ গ্রেফতার   » «    ভারত যাওয়ার পথে ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রীসহ গ্রেফতার ২   » «    সবজিতে স্বস্তি ফিরলেও চড়া মাছ-মুরগি ও চালের বাজার   » «   

অবশেষে যমুনা রেলসেতুতে ১২০ কি.মি গতিতে চললো ট্রেন

 

 

জেলা প্রতিনিধি:

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড় রেলওয়ে সেতুর ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ১২০ গতিতে চললো পরীক্ষামূলক দুইটি ট্রেন। আজ (৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে ধীরে ধীরে গতি বাড়িয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন দুটি চলাচল করলেও বিকেল ৪টা ২৩ মিনিটের দিকে ট্রেন দুটি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কি.মি গতিতে সেতু অতিক্রম করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যমুনার ওপর নির্মিত যমুনা রেলওয়ে সেতুর চিফ সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. মাইনুল ইসলাম।

এর আগে সকাল ৯টা ২০ এর দিকে আজকের প্রথম পরীক্ষামূলক ট্রেন দুটি সফলভাবে সেতু অতিক্রম করে। এরপর পর্যায়ক্রমে বাড়তে থাকে ট্রেনের গতি। প্রথমে ঘন্টায় ২০ কি.মি দিয়ে শুরু করে এরপর ৬০, ৮০, ৯০, ১০০, ১১০ ও সর্বশেষ ১২০ কি.মি গতিতে চলে ট্রেন দুটি।

মাইনুল ইসলাম বলেন, আজই প্রথম যমুনা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে পূর্ণ গতিতে (ঘন্টায় ১২০ কি.মি গতিতে) ট্রেন চললো। এই গতিটা ধীরে ধীরে আনা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথমে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ঘন্টায় ২০ কি.মি গতিতে দুটি ট্রেন সেতুর পূর্ব পাড় থেকে পশ্চিম পাড়ে ও পশ্চিম পাড় থেকে পূর্ব পাড়ে ছেড়ে যায়। এরপর ১০টা ২০মিনিটের দিকে দ্বিতীয়বার ঘন্টায় ৬০ কি.মি গতিতে দুইপাশ থেকে ট্রেন দুটি সেতু অতিক্রম করে। এরপর ১১টা ১ মিনিটে একটি ট্রেন সেতু পশ্চিম পাড় থেকে ঘন্টায় ৮০ কি.মি গতিতে সেতুতে ওঠে ও ১১টা ৫মিনিটে পূর্ব পাড় থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি পশ্চিমপাড়ের সেতুর শেষ অংশ অতিক্রম করে। এভাবে সর্বশেষ বিকেল ৪টা ২৩ মিনিটে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন দুটি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কি.মি গতিতে বিপরীত দিক থেকে আলাদা লেন দিয়ে সেতু অতিক্রম করে।

মাইনুল আরও বলেন, আমরা সবাই অধীর আগ্রহে সকাল থেকে সারাদিন পূর্ণ গতির জন্য অপেক্ষা করেছি। সত্যি বলতে গেলে আমরা খুবই আনন্দিত এবং উত্তেজিতও বলা যায়। কয়েকটা বছরজুড়ে আমাদের এতবড় টিমের বিশাল কর্মযজ্ঞের পরে আজ এর পূর্ণতা পেল। দেশের সর্বোচ্চ গতিতে ট্রেন চলবে এখানে। এটা আমাদের জন্য মাইলফলক।

পরীক্ষামূলকভাবে চলা এই ট্রেনে যমুনা রেলওয়ে সেতু কতৃপক্ষের সঙ্গে সহযাত্রী হবার সুযোগ হয়েছিল এই প্রতিবেদকের। সেখানেই কথা হয় এই প্রকল্পের সাব স্ট্রাকচার ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক সরদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, আজকে আমরা ধীরে ধীরে গতি বাড়িয়ে দেখার চেষ্টা করছি কোনো ঝাকুনি কয় কিনা বা কোনো ভাইবেশন টাইপের কিছু থাকে কিনা। তবে আজ আমরা সর্বোচ্চ গতিতে চালিয়েও নেগেটিভ কোনকিছু পাইনি। তিনি বলেন, এখানে আমরা অনেক নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি। দীর্ঘদিন এই কর্মযজ্ঞ শেষে এটা ফাইনালি সম্পন্ন হলো, এই আনন্দ আসলে ভাষায় প্রকাশ করা যায়না। এছাড়াও এই রেলসেতুর উদ্বোধনের দিন তারিখ ও নাম এখনো চুড়ান্তভাবে নির্ধারন হয়নি বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে ৯ হাজার ৭৩৪ দশমিক ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে এ ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা। যার ১২ হাজার ১৪৯ দশমিক ২ কোটি টাকা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ হিসেবে দিয়েছেন। এই প্রকল্পের মূল নির্ধারিত সময় ছিল জুলাই ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩। কিন্তু প্রথম সংশোধনে এ সময়সীমা ডিসেম্বর ২০২৪ এ স্থানান্তরিত করা হয়। এর আগে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। এরপর গত ২৬ নভেম্বর সর্বোচ্চ ৪০ কি.মি গতিসীমায় রেলওয়ে সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম ট্রেন চলে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
বিষয়: * অবশেষে যমুনা রেলসেতুতে ১২০ কি.মি গতিতে চললো ট্রেন
সাম্প্রতিক সংবাদ