নগরকান্দায় ব্যবসায়ীদের তিনটি দোকান দখলের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
ফরিদপুর প্রতিনিধি:
বরং অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে ওই বিএনপি নেতার হুমকি-থামকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। দখলকারী বিএনপি নেতার নাম মো. খায়রুজ্জামান মোল্যা (৩৫)। তিনি উপজেলার তালমা ইউনিয়নের গহেরপুর গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে ও উপজেলা বিএনপির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা অভিযোগ বলেন, দীর্ঘনি ধরে রসুলপুর বাজারের খাল পাড়ে থাকা সরকারি জায়গা লিজ নিয়ে দোকানঘর নির্মাণ করে পেঁয়াজ-পাটের ব্যবসা করে আসছি আমরা। কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন হঠাৎ ৬ আগস্ট দোকানের সামনে এসে বিএনপির স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা খায়রুজ্জামান মোল্যা আমাদের দোকান থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। আমরা না বের হতে চাইলে তিনি আমাদের গালাগালি করে চলে যান। পরে আমরা দোকান বন্ধ করে বাড়িতে গেলে খায়রুজ্জামান এসে পাশাপাশি থাকা তিনটি দোকানে ডাবল তালা মেরে দেন।
বিষয়টি স্থানীয়রা কয়েক দফা মিমাংসা করে দিলেও দোকানের তালা খুলে দেননি খায়রুজ্জামান। এতে দোকানে থাকা বিপুল পরিমাণে পেঁয়াজ নস্ট হতে শুরু করে। পরে বাধ্য হয়ে আমরা নগরকান্দা থানায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর পৃথকভাবে তিনটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত খায়রুজ্জামানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে ওই বিএনপি নেতা আমাদের নানাভাবে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।
তবে দখল করা এসব দোকান নিজেদের বলে দাবি করেন উপজেলা বিএনপির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক মো. খায়রুজ্জামান মোল্যা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমাদের জায়গার থাকা তিনটি দোকান দখল করে নেন স্থানীয় প্রভাবশালী ওই ব্যবসায়ীরা। আওয়ামী লীগের পতনের পর আমাদের জায়গা পুনরুদ্ধার করার জন্য এসব দোকানে তালা লাগিয়ে দিয়েছি।
নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে থাকা) মো. হাবিবুর রহমান বাবুল তালুকদার বলেন, দখলদার ও চাঁদাবাজ দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন আমাদের নেতা তারেক রহমান ও ফরিদপুর-২ আসনের বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংক। অতএব কোনো বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে যদি চাঁদাবাজি ও কারো দোকান দখলের অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা বিএনপি নেতা খায়রুজ্জামানের বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ সফর আলী বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষ ডেকেছিলেন। তবে ওই জায়গার সঠিক কাগজপত্র কেউ দেখা পারেনি। যে কারণে আমরা বাদী-বিবাদী পরামর্শ দিয়ে কোর্টের মাধ্যমে ঘটনাটি মিমাংসা করার জন্য। কারণ জায়গা জমির বিষয় আসলে থানা পুলিশের তেমন কোনো ভুমিকা নেই।