শেখা হাসিনাকে কারা মনস্টার বানালো?
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনাকে কারা মনস্টার বানালো? এমন একটি প্রশ্ন রেখে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ১৬ই সেপ্টেম্বর তার দেয়া পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-
শেখ হাসিনাকে আমরা কিভাবে মনস্টার হয়ে উঠতে সাহায্য করলাম? কারা তাকে মনস্টার বানালো? সহজ উত্তরঃ বাংলাদেশের সো কলড নাগরিক সমাজ। “বিএনপি ঠেকাও” (যদিও তারা মুখে বলতো বিএনপি-জামাত, কিন্তু ভেতরে ভেতরে তারা জানতো ভোটে জেতার সক্ষমতা বিএনপির বেশী, তাই বিটুইন দ্য লাইন ছিলো বিএনপিই) মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ নাগরিক সমাজ হাসিনাকে যা ইচ্ছা তা করার লাইসেন্স দিয়েছে।
এই আত্মসমালোচনাটা বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ যদি না করে তাহলে ভবিষ্যতেও আমরা এইরকম মনস্টার জন্ম দিতেই থাকবো। আমরা মুখে গণতন্ত্র বলি, কিন্তু আমাদের বগল মে “ঠেকাঠেকি”! দেখেন যে কেউ যে কাউকে ঠেকাতে চাইতেই পারে। এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। এর জন্য সে প্রচার চালাতে পারে, জনমত গঠন করতে পারে। কিন্তু গোলমাল দেখা দেয় যখন এই ঠেকাঠেকিটা করা হয় ভোট ডাকাতি বা ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়ার মাধ্যমে। আমাদের আদি পাপ এখানে। এই ঠেকাঠেকি অধিদপ্তর থেকেই গুম-খুন-ব্যাংক লুট-লক্ষ কোটি টাকা পাচার-রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করার লাইসেন্স বা সম্মতি দেয়া হইছিলো শেখ হাসিনাকে।
সময় আসছে বোঝার বাংলাদেশের মানুষ জানে কখন কাকে ঠেকাতে হবে। ৯৬তে সে বিএনপিকে ঠেকায় নাই? ২০০১য়ে আওয়ামী লীগকে ঠেকায় নাই? ২০০৮য়ে আবার বিএনপিকে ঠেকায় নাই? তারপরতো আর জনগনকে সুযোগই দেয়া হয় নাই। ফলে সময় এসেছে ঠেকাঠেকির দায়িত্ব জনগনের হাতে তুলে দিয়ে এই আদিপাপ থেকে বের হয়ে আসার।
প্রশ্ন আসতে পারে, জনগণ যদি ভুল লোককে নির্বাচিত করে? ভুল শক্তি সরকারে আসে? গরিষ্ঠের শাসন মানলে আপনাকে এটা মেনে নিতেই হবে। মেনে নিয়ে আপনি ভুল লোকের ভুল কাজের তীব্র সমালোচনা করবেন, প্রতিবাদ করবেন, আদালতে যাবেন! তাকে লাইনে রাখার জন্য যা যা করা দরকার সবই করবেন। এবং পরের ভোটে ঠেকিয়ে দিবেন। এটার নামই গণতন্ত্র।
আর তা না করে আপনি যদি মনে করেন আমরা আর আমার কতিপয় অনুসারীই দেশের ভালো কিসে হবে সেটা সবচেয়ে ভালো বুঝি, তাহলে আপনি আরেকটা হাসিনা হয়ে উঠার প্রক্রিয়ায় আছেন। কানে বাজে এখনো তার কথা, “আমার চেয়ে এই দেশের ভালো কে বেশী বোঝে”?