কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে জবির ৩৫ বিভাগের ৯৯ টি ব্যাচের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৬ জুলাই) “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের” সাথে একাত্মতা পোষণ করে নায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহন না করার ঘোষনা দেন শিক্ষর্থীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতোমধ্যে ৩৫টি বিভাগের ৯৯টি ব্যাচ ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছে। এগুলি হলো: গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা (১৪, ১৫, ১৬, ১৮) ব্যাচ, ভূগোল ও পরিবেশ (১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, আইন (১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, মার্কেটিং (১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, দর্শন (১৭, ১৮) ব্যাচ, সমাজকর্ম (১৮) ব্যাচ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (১৪, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, গণিত (১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান (১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি (১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, ইসলামিক স্টাডিজ (১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, সমাজবিজ্ঞান (১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, ইতিহাস (১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, জন প্রশাসন (১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, নৃবিজ্ঞান (১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, হিসাববিজ্ঞান (১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, পরিসংখ্যান (১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, ইংরেজি (১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, পদার্থবিজ্ঞান (১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, অর্থনীতি (১৮) ব্যাচ, রসায়ন (১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, প্রাণিবিদ্যা (১৪) ব্যাচ, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন (১৮) ব্যাচ, মনোবিজ্ঞান (১৭, ১৮) ব্যাচ, উদ্ভিদবিদ্যা (১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, থিয়েটার (১৮) ব্যাচ, ফার্মেসি (১৮) ব্যাচ, কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং (১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, মাইক্রোবায়োলজি (১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, ইনফরমেশন সায়েন্স ও লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট (১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮) ব্যাচ, বায়োকেমিস্ট্রি (১৭, ১৮) ব্যাচ, অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম (১৬, ১৭) ব্যাচ, ব্যবস্থাপনা (১৫, ১৮) ব্যাচ, চিত্রকলা (১৫) ব্যাচ, এবং ফিন্যান্স (১৭) ব্যাচ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ১৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, সকল একাডেমিক কার্যক্রম যেমন পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরবো না। এটি আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। কোটা ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার কারণ। মেধার ভিত্তিতে চাকরি পাওয়া উচিত, বৈষম্যমূলক কার্যক্রম মেনে নেওয়া যাবে না। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরও সরকার নতুন করে এই বৈষম্যমূলক কোটার প্রচলন করছে, যা জাতির জন্য ক্ষতিকর। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সম্মান থাকলেও উত্তরসূরিদের অযৌক্তিক কোটা দেওয়া দৃষ্টিকটু। কোটার মতো অযৌক্তিক বিষয় প্রতিষ্ঠিত করলে সমাজ ও দেশের উন্নতি হবে না বরং শিক্ষার্থীরা ঝড়ে পড়বে, দেশ হবে মেধাশূন্য, বাড়বে বেকারত্ব।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ১৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুরাদ হোসেন শান্ত বলেন,যেকোনো প্রকার যৌক্তিক দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে।ঠিক তেমনিভাবে কোটার মতো একটা বৈষম্যমূলক ব্যবস্থাকে দূর করে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করছি।এমনকি শুধু ক্লাস পরীক্ষা বর্জন নয়, আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত যা যা করা প্রয়োজন, যে ধরনেরই কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রয়োজন আমরা তা করেই আমাদের যৌক্তিক দাবি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় করবো ইনশাআল্লাহ।