মানিকগঞ্জের সিংগাইরে শাকিল হত্যার অভিযোগে দুই মাস পর আদালতে মামলা

মানিকগঞ্জ :

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের আঠালিয়া গ্রামের শাকিল নিহতের ঘটনায় ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। তার পরিবারের দাবী, তাকে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত শাকিল ওই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। ঘটনার দুই মাস পর তার বড় বোন রাশেদা বেগম বাদি হয়ে ২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন বলে শনিবার (২২ জুন) দুপুরে নিহতের পরিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে- একই গ্রামের মৃত ফজল শেখের ছেলে মকবুল (২৫) ও মৃত বরকত মুন্সির ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম (২৫) অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জনকে। মামলাটি মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট –আদালত ২ এর বিচারক আমলে নিয়ে সিংগাইর থানার ওসিকে আগামী ৭ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন। এর আগে গত ৬ জুন দঃ বিঃ ৩০২, ৩০৪ (খ) ও ৩৪ ধারায় এ মামলাটি দায়ের করেন বলে বাদির আইনজীবি অ্যাডভোকেট মো. জহিরুল ইসলাম জানান ।

মামলার অভিযোগে প্রকাশ, নিহত শাকিল প্রতিবেশি জনৈক জান্নাতিকে প্রেম করে বিয়ে করে। জান্নাতির পরিবার সে বিয়ে মেনে নেয়নি। দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ মিটাতে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় আসামি মকবুল ও মঞ্জুরুল। সুযোগ নিয়ে তারা দুই জনসহ অজ্ঞাত আরো দুই জন ঈদুল ফিতরের দিন গত ১১ এপ্রিল দুপুর দেড় টার দিকে শাকিলকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়। হেমায়েতপুর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের জায়গীর ও ভূমদক্ষিণ বাসস্ট্যান্ডের মাঝামাঝি চলন্ত সিএনজির ভিতরে শাকিলকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে মকবুল ও মঞ্জুরুল। এ সময় শাকিল ডাকচিৎকার করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই সড়কের বিপরীত দিক থেকে আসা মোটর সাইকেলের সাথে সংঘর্ষে সিএনজি উল্টে যায়। সিএনজিতে থাকা অজ্ঞাত দুই আসামি পালিয়ে যায়। আসামি মকবুল ও মঞ্জুরুল মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে ঘটনাস্থল থেকে উধাও হয়। আশ-পাশের লোকজন নিহত শাকিলকে সাভারস্থ হেমায়েতপুর জামাল ক্লিনিকে ভর্তি করলে বাদির পরিবার ও তার আত্নীয় স্বজনরা দুর্ঘটনার সংবাদ পান।

মামলার বাদি রাশেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, গত রোজার ঈদের দিন আমার ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসামিরা মদ্যপান অবস্থায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করলেও সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে এমন খবরে আমরা লাশ ময়না তদন্ত করতে দেইনি। ঘটনার দুই দিন পর হত্যার আসল রহস্য জানতে পারি। পড়ে আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলা সঠিক তদন্তে নিহতের লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের দাবিও জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে মামলার আসামী মকবুল বলেন, ঈদের নামাজ পড়ে সিএনজি নিয়ে আমরা ঘুরতে বের হই। দুপুরের দিকে আমাদের গ্রামের জনৈক জলিলের ভিটা থেকে শাকিল আমাদের সিএনজিতে ওঠে। এরপর মোটর সাইকেলের সাথে সিএনজির সংঘর্ষে জায়গীর এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে। সেখানেই শাকিলের মৃত্যু হয়। অপর আসামী মঞ্জুরুল হক জানান, আমি সিএনজির চালক ছিলাম ।

পূর্ব দিক থেকে আসা মোটরসাইকেল সিএনজির সাথে মুখোমুখি লেগে যাওয়ার উপক্রম হয়। ওই মোটর সাইকেলের সাথে সংঘর্ষ এড়াতে গিয়ে সিএনজি ওল্টে গিয়ে শাকিল মারা যায়। তাকে হত্যা করা হয়নি বলে অভিযুক্তদ্বয়ের দাবী। তবে সহপাঠী সকলেই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে মকবুল ও মঞ্জুরুল স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ওসি মোঃ জিয়ারুল ইসলাম বলেন, মামলার সঠিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * আঠালিয়া * ধল্লা ইউনিয়ন * সিংগাইর
সর্বশেষ সংবাদ