সৈয়দপুরে সিজার করতে গিয়ে প্রসূতির মৃত্যু: হাসপাতাল সীলগালা, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নিবন্ধন ছাড়াই কার্যক্রম পরিচালনা করায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে মা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টার মালিকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কের (দিনাজপুর রোড) পৌরসভা মোড়ের ওই হসপিটাল এন্ড ডায়াগনোস্টিক ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি সীলগাল করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইসলাম। এ সময় নীলফামারী সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডা. চন্দন রায়, সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার মো. মোখলেছুর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. আলতাফ হোসেন সরকারসহ সৈয়দুর থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কের পৌরসভা মোড়ে মা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টার নামের প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার জন্য নীলফামারী সিভিল সার্জন দপ্তরে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটির মালিক শুধুমাত্র কাগজ কলমে কিছু সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে সেটি চালু করেন। নীলফামারী সিভিল সার্জন দপ্তর থেকে সেটির কোন রকম নিবন্ধন না মিললেও সেখানে ডেলিভেরি রোগী ভর্তি সিজারসহ সকল প্রকার অপারেশন করা হচ্ছিল প্রতিনিয়ত।
গত ৩ মে শহরের বিমাববন্দর এলাকার নুরুল ইসলামের স্ত্রী মুক্তা আক্তারের প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে এই মা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারটিতে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে বাইরে থেকে একজন গাইনী চিকিৎসক এনে প্রসূতি মুক্তা আক্তারের সিজার করা হয়। কিন্তু সিজারের পর পরই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে দ্রুত তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রংপুরে যাওয়ার পথেই মুক্তা আক্তারের মৃত্যু হয়েছে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে হাসপাতালটিতে চরম অব্যবস্থাপনা, কর্তৃপক্ষের অবহেলায় প্রসূতি মুক্তা আক্তারের মৃত্যুর ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম জানান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন -২০০৯ অনুযায়ী মা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের পরিচালক ফয়সাল আহমেদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সঙ্গে হসপিটালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। অবৈধ, অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি। (ছবি আছে)