গ্রামে বাড়ছে তালাক, নেপথ্যে পরকীয়া
সদরুল আইনঃ
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) নতুন তথ্যে দেখা যাচ্ছে, দেশে বিয়ের হার কমেছে। পাশাপাশি কমেছে তালাকের হারও।
তবে শহরের তুলনায় তালাকের হার গ্রামে বেড়েছে। ২০২৩ সালে দেশে বিয়ের হার ছিল (প্রতি হাজারে) ১৫.৭, যা ২০২২ সালে ছিল ১৮.১। আর ২০২১ সালে ছিল ১৩.৫।
অন্যদিকে তালাক দেওয়ার হারও কমে ১.১ শতাংশ হয়েছে, ২০২২ সালে যা ছিল ১.৪ শতাংশ। ২০২১ সালে এ হার ছিল ০.৭ শতাংশ। বিবিএসের বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২৩-এর প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
তবে গ্রামে তালাক বাড়ার বড় কারণ বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক। জরিপে উত্তরদাতাদের প্রায় ২৩ শতাংশ এই কারণ দেখিয়েছেন।
২০২২ সালে বিয়ে বেশি হওয়ার বিষয়ে সমাজ বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, ২০২০-২১ সময়কালে করোনা মহামারির কারণে অনেক বিয়েশাদি হয়নি। করোনা-পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালে তাই বিয়ের হার বেড়ে গিয়েছিল। ২০২৩ সালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় তা কমেছে।
বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, শহরে বিয়ের হার কম। ২০২৩ সালে ছিল প্রতি হাজারে বিয়ে ১২, গ্রামে এই হার ১৬.৮। ২০২২ সালে শহরে বিয়ের হার ছিল ১৩.৮ আর গ্রামে ১৯.৫।
আবার অপরদিকে তালাকের হার গ্রামে বেশি, ২০২৩ সালে ছিল ১.১ শতাংশ। এর আগের বছর ছিল ১.৪ শতাংশ। আর শহরে এ হার ০.৯ শতাংশ, এক বছর আগে ছিল ১.০ শতাংশ।
বিবিএসের জরিপের দেখা যায়, তালাকের বড় কারণ বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক। জরিপে উত্তরদাতাদের প্রায় ২৩ শতাংশ এই কারণ দেখিয়েছেন। এর পর রয়েছে দাম্পত্যজীবন পালনে অক্ষমতাকে কারণ হিসেবে বলেছেন ২২ শতাংশ।
ভরণপোষণের ব্যয় বহন করতে অক্ষমতা অথবা অস্বীকৃতি, পারিবারিক চাপ, শারীরিক নির্যাতন, যৌন অক্ষমতা বা অনীহা ইত্যাদিও রয়েছে তালাকের কারণের তালিকায়।
তালাকের হার বাড়ার পেছনে আরও যেসব কারন রয়েছে তা হল,নারীদের পর্দাহীনতা, অবাধ মেলামেশা, নারী কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, ধর্মীয় মূল্যবোধ উঠে যাওয়া, স্বাধীনভাবে চলাফেরা, অর্থলোভ ইত্যাদি।
সংসারের অভাব, উচ্চাভিলাষী মন মানসিকতা, বিলাসী জীবনের দিকে ধাবিত হওয়া, নিজের সম্পদের প্রতি সন্তুষ্ট না থাকায় পরকীয়ায় জড়াচ্ছে নারীরা।আর এতে করে সংসার ভেঙে যাচ্ছে।পর পূরুষে আকষ্ট হয়ে ঘর ভাঙছে নারীরা।
অপরদিকে উঠতি বয়সের তরুণীরা বয়ো:সন্ধিকালের প্রথমেই একাধিক সম্পর্কে জড়াচ্ছে সহজলভ্য প্রযুক্তির কারনে।এমনকি ১/২ সন্তানের মা প্রযুক্তি আসক্তি হয়ে স্বামী সংসার ছাড়ছে পরকীয়ায় জড়িয়ে। ধর্মিয় চেতনা, পারলৌকিক আযাব, নীতি নৈতিকতা এখন আর কাজ করছে না মানুষের মধ্যে।
সম্মানবোধ, মানবিকতা, পার্থিব মোহ আজ পেয়ে বসেছে গোটা সভ্যতাকে । অনৈতিক কাজ বা পথকে মানুষ এখন আর পাপ কাজ বলে মনে করছে না। অধ:পতনের চরম সীমায় মানুষ পৌঁছে যাচ্ছে স্বার্থের লোভাচুর বিলাসী জীবনকে স্পর্শ করতে যেয়ে।
এসব কারনে বিয়ে বহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি বিবাহিত জীবনে নারীরা পুরুষের আয়ে সন্তুষ্ট থাকতে না পেরে পরকীয়ার পথে পা বাড়াচ্ছে এবং এর ফলে তালাকের প্রবণতা দিন দিন অস্বাভাবিকহারে বেড়েই চলেছে।