রাণীশংকেল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৪ চিকিৎসক সহ ৮ কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে পেষনে, চিকিৎসা সেবায় চরম দুর্ভোগ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৪ চিকিৎসক ও বিভিন্ন পদের ৮ জন কর্মচারী দীর্ঘদিন থেকে পেষনে অন্যত্রে থাকায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন পদের ৮জন জনবল পেষনে অন্যত্রে থাকায় জনবল সংকটে পড়েছে।
জানা যায়, রাণীশংকৈল উপজেলার ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের  নিয়ম অনুযায়ী ১৮ জন চিকিৎসক থাকার নিয়ম থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ মোট ১৪ জন চিকিৎসকের পদ পূরন রয়েছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এর মধ্যে ৪জন চিকিৎসক প্রেষণে অন্যত্রে রয়েছেন।
এরা হলেন, চিকিৎসক মিথুন চন্দ্র দেবনাথ(এ্যানেসথেটিষ্ট) তিনি দীর্ঘ ৩ বছর থেকে পার্শ্ববর্তী বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় প্রেষণে রয়েছেন, চিকিৎসক সাইয়ারা রওনক(সহকারী সার্জন) দেড় বছর,  চিকিৎসক মোনালিশা মেহেজাবিন(প্যাথলজিষ্ট),ও চিকিৎসক সারওয়ার রহমান(জুনিয়র কনসালটেন্ট,অর্থোপেডিক্স) প্রায় ৬ মাস থেকে  ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেষণে রয়েছেন।
মোট ৩৬ টি  নার্স এর পদের মধ্যে ৪ জন বিএসসি করার কারণে অনুপস্থিত এবং  কামরুন নাহার নামে ১ জন প্রায় তিন বছর ধরে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেষণে রয়েছেন। ওয়ার্ড বয় ৩ জনের মধ্যে ২ জন উপস্থিত থাকলেও বাবুল হোসেন নামে একজন দীর্ঘ দিন থেকে প্রেষণে রয়েছে ঠাকুরগাঁও সদরে, জুনিয়র মেকানিক হাসান মোহাম্মদ সৌরওয়াদ্দী (সাজু) তিনিও দীর্ঘ ৪ বছর থেকে টিবি হাসপাতাল ঠাকুরগাঁওয়ে প্রেষণে রয়েছেন।
এদিকে একটি মাত্র পদে কর্মচারীরা থাকলেও তারাও প্রেষণে অন্যত্রে রয়েছেন,তারা হলেন টি,এল,সি,এর দায়িত্বে থাকা নাসরিন জান্নাত তিনি ঠাকুরগাঁও টিবি হাসপাতাল ,ইমারজেন্সি এটেনডেন্স এ দায়িত্বে থাকা সাইদুর রহমান তিনি  ৩ বছর ধরে প্রেষনে রয়েছেন ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে।
ওটি বয়  আইয়ুব আলী তিনি দীর্ঘ ৩ বছর ধরে প্রেষণে রয়েছেন ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন অফিসে। আয়া পদে কাগজে কলমে ২ জন থাকলেও রয়েছে ১ জন। আফসানা মিমি নামে অন্যজন আয়া তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়ন সাব সেন্টারে প্রেষনে রয়েছেন। মালি পদে জিয়াউর রহমান নামে একজন  কাগজে কলমে থাকলেও তিনি প্রেষণে চলে গেছেন ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে। এদিকে পরিচ্ছন্নতা কর্মির পদটি রয়েছে ফাঁকা।
প্রেষণে চিকিৎসক ও কর্মচারীরা অন্যত্রে থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটিতে চিকিৎসা সেবার মান ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন রাণীশংকৈল উপজেলা বাসী। অভিযোগ উঠেছে লোকবল সংকট ও চিকিৎসক না থাকার সুবাধে অনেক সময় অনেক কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না এ উপজেলার বাসিন্দারা। স্ধানীয়দের দাবী এ উপজেলায় পদ ধরে রেখে অন্য উপজেলায় চাকুরী করা মানে এ উপজেলার ক্ষতি করা। তাই স্থানীয়রা দাবী করেছেন প্রেষনে থাকা চিকিৎসক কর্মচারীরা যেন অতি দ্রুত তাদের নিজ কর্মস্থলে ফিরে এসে উপজেলার সেবার মান বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা চিকিৎসক ফিরোজ আলম বলেন, চিকিৎসক ও জনবল সংকট থাকলে চিকিৎসার মান ব্যাহত হবে এটাই স্বাভাবিক। এর আগে প্রেষনের ফিরিয়ে নেওয়া হলেও তারা আবারো কিছুদিন পর প্রেষণে চলে গেছেন।  যারা প্রেষণে রয়েছেন তাদের কর্মস্থলে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলা সিভিল সার্জন দপ্তরে প্রায় পত্র লেখা হয়ে থাকে।
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন চিকিৎসক নুর নেওয়াজ গতকাল সোমবার মুঠোফোনে বলেন, প্রেষণে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের নিজ কর্মস্থলে ফেরার জন্য প্রক্রিয়া অব্যহত রয়েছে। ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দীন আহাম্মদ গতকাল সোমবার মুঠোফোনে বলেন, রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন সভা হয় কিনা, জানি না। আমাকে তারা ডাকে না। ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কি অবস্থা তা জানি না। আপনারা নিউজ করেন।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * চিকিৎসা সেবায় চরম দুর্ভোগ * রাণীশংকেল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের
সর্বশেষ সংবাদ