কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনে অবদান রাখছে সৈয়দপুরে মিন্নির চোখের কৃত্রিম পাপড়ি তৈরীর কারখানা
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে যেমন বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন হচ্ছে। তেমনি পাশাপশি বেশ কিছু নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
সৈয়দপুরের নারী উদ্যোক্তা মিন্নি আকতার মিথুন ও তাঁর স্বামী চীনের নাগরিক লীন ঝানরুই (৪৭) এর প্রতিষ্ঠান ‘মিন্নি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র এই অবদান রেখে চলেছে। বৃহত্তর পরিসরে এর ব্যাপ্তি ঘটাতে পারলে ব্যাপক উন্নয়ন করা সম্ভব হবে এই সেক্টরে।
নারীর সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি তথা রূপচর্চার অন্যতম অনুষঙ্গ কৃত্রিম চোখের পাপড়ি বা আইল্যাশ। আধুনিক নারীদের কাছে এর চাহিদা আকাশ ছোঁয়া। আর এই চোখের কৃত্রিম পাপড়ি তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে সৈয়দপুর শহরের উপকণ্ঠে।
সৈয়দপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক সংলগ্ন ওয়াপদা মোড়ে নীলফামারী থেকে সৈয়দপুরে প্রবেশ পথের সাথে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের ভাড়া ফ্লোরে প্রতিষ্ঠিত মিন্নি ও লীন দম্পতির এই প্রতিষ্ঠানে ২৫ জন নারী ও ৫ জন পুরুষ কাজ করছেন। তারা সকাল ৮টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তৈরি করছেন চোখের কৃত্রিম পাঁপড়ি।
প্রতিদিন কাজ করে শ্রমিকরা পাচ্ছেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এতে করে সংসার চালানোয় সহযোগিতা করতে পারছেন নারীরা। এ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারীদের বেশিরভাগই নীলফামারীর সদর উপজেলা ও সৈয়দপুর উপজেলা শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার।
তাদের মধ্যে তাসমিন আক্তার (২৫), লামিয়া (২০), নায়না (২৪), আইরিন (২১) ও মুশকান (২৪) জানান, এখানে কাজ করে আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারছি। আগে সবাই প্রশিক্ষণ নিয়েছি, তারপর এ কাজে যোগদান করছি।
জানা গেছে, সৈয়দপুর শহরের নিমবাগান এলাকার অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে মিন্নি আকতার মিথুন। নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের টিএইচটি-স্পেস ইলেট্রিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করতেন মিন্নি। একই কোম্পানিতে টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন চীনের গুয়ানডং শহরের চিশুয়ী টাউনের লীন সিংকের ছেলে লীন ঝানরুই(৪৭)।
গত ২০২২ সালের আগস্ট মাসে সৈয়দপুর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এক সহকর্মীর বিয়ের অনুষ্ঠানে লীন ঝানরুই ও মিন্নির পরিচয় হয়। সেই পরিচয় থেকে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। এরপর ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর লীন ঝানরুই মুসলমান হয়ে নাম রাখেন লাবিব। স্বামী-স্ত্রী মিলে গড়ে তোলেন এই পাপড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মিন্নি আকতার মিথুন বলেন, চাইনিজ টিকটক দেখে এ কাজে উদ্বুদ্ধ হই। স্বামী-স্ত্রী পরামর্শ করে গড়ে তুলি এই চোখের কৃত্রিম পাপড়ির কারখানাটি। প্রতিদিন এই কারখানা থেকে ৫০০ থেকে ১ হাজার চোখের পাপড়ি তৈরি হচ্ছে। যা পরবর্তীতে চীনে পাঠানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই পাপড়ি তৈরির সরঞ্জাম আনা হচ্ছে চীন থেকে। কারখানাটিতে আমার স্বামী উপদেষ্টা ও বাবা চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছেন। দেশের অনেকে চোখের পাঁপড়ি নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পরবর্তীতে মেশিনপত্র কিনে সেভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি।