সুরমা নদীতে বালু উত্তোলনে অবৈধ ড্রেজারের তান্ডব, গ্রামবাসি ৩জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার শহরতলীর সুরমা নদীতে এবং বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের ধোপাজান চলতি নদীতে একটি প্রভাবশালী চক্র প্রশাসনের চোখ ফািঁক দিয়ে রাতের আধাঁরে চলছে অর্ধশতাধিক অবৈধ ড্রেজার (বোমা মেশিন) দিয়ে চলছে লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলনের মহোৎসব।
ফলে নদী তীরবতীর্ উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের কুতুবপুর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গড়ে উঠা গুচ্ছগ্রাম, পুরান লক্ষণশ্রী, টুকের বাজার, লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের জলিলপুর, শ্রীপুর, হবতপুর এবং বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের খাইয়ারগাঁও, আদাং ও মণিপুর হাটিসহপ্রায় ৫০টি গ্রামের মানুষ অবৈধ ড্রেজার মেশিনের তান্ডব ও শব্দে রাতের ঘুম হারামের পাশাপাশি স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা তাদের পড়াশুনায় বেঘাত ঘটলে ও প্রতিবাদ করার সাহস কারো নেই। ফলে এই নদী তীরবতীর্ গ্রামগুলো ও আশপাশের বাজারের দোকানপাঠ ও ধমীর্য় স্থাপনা মসজিদ ইতিমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে এবং বাকি অন্যান্য স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে।
এ নিয়ে কুতুবপুর গ্রামের বিশিষ্ঠ সমাজসেবক বশির আহমদ এই অবৈধ ড্রেজাম মেশিন বন্ধের জন্য গত ২০ ও ২১ জানুয়ারী সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ভোরে ভূক্তভোগী গুচ্ছগ্রাম ও কুতুবপুর গ্রামবাসি মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে দুইগ্রামের নারীপূরুষ মিলে সুরমা নদীতে এসে অবৈধ ড্রেজারের তিন শ্রমিককে আটক করেন।
আটককৃতরা হলেন জেলার বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের কুচগাঁও গ্রামের হারিছ মিয়ার ছেলে শফিক মিয়া (৩২), একই গ্রামের মজিদ মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (১৭) ও একই ইউনিয়নের আদাং গ্রামের আপ্তু মিয়ার ছেলে সুহেল মিয়া (১৮) । পরে কুতুবপুর গ্রামের বশির মিয়ার বাড়িতে তাদের ধরে এনে সদর থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আটককৃতরা জানান, ড্রেজার পরিচালনা করেন বিশম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের কুচগাঁও গ্রামের রবি মিয়া, আদাং গ্রামের ড্রেজার মালিক মোঃ সবুজ জামান, সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সদরগড় গ্রামের মিনারুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের উরাকান্দা গ্রামের রমজান মিয়াসহ আরো বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীরা মিলে গত কয়েকমাস ধরে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই এই সুরমা নদী ও ধোপাজান চলতি নদীতে অর্ধশতাধিক ড্রেজার (বোমা) মেশিন দিয়ে দিনদুপুরে রাতের আধাঁরে প্রতিরাতে লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে তারা ঐ সমস্ত নামাংঙ্কিত ব্যক্তিদের ড্রেজারে শ্রমিক হিসেবে দিনমুজুরের কাজ করছেন পেঠের তাগিদে।
এ ব্যাপারে কুতুবপুর গ্রামের সমাজসেবক মোঃ বশির মিয়া জানান, ঐ সমস্ত অবৈধ ড্রেজার ব্যবসার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কোন নদী তীরবতীর্ গ্রামের কেউ প্রতিবাদ করলে তাদেরকে বিভিন্নভাবে প্রাণ মেরে ফেলার হুমকি ও দেয়া হয়। তিনি বলেন গত কয়েকমাস ধরে নদীতে এই অবৈধ এই ড্রেজার চালানোর ফলে তাদের বাড়িঘর হুমকির মুখে রয়েছে এগুলো দ্রুত বন্ধ করা না হলে ধমীর্য় স্থাপনাসহ সাধারন মানুষের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশংঙ্কা রয়েছে। তাই এই কাজের সাথে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টানমূলক শাস্তি প্রদানে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ ব্যাপারে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ খালেদ চৌধুরী তিনজনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাৎক্ষনিক পুলিশ অভিযান চালিয়ে আরো ৯টি ড্রেজার আটক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।