নীলফামারীতে স্ত্রীসহ দুই সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা ব্যবসায়ীর
স্টাফ রিপোর্টার:
নীলফামারীতে স্ত্রীসহ দুই শিশু কন্যা সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ছুরি দিয়ে নিজের গলাকেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ব্যবসায়ী আশিকুল হক বাবু মোল্লা (৪০)।
শুক্রবার (০২ ফেব্রুয়ারী/২৪) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের দারোয়ানী পুরাতন বন্দর বাজার মোল্লাপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তিনি ওই এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান মৃত-আব্দুর রোউফ মোল্লার ছেলে। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নিহতরা হলেন- আহতের স্ত্রী মোছাঃ তহুরা বেগম (৩৫), দুই সন্তান আয়েশা আক্তার তানিয়া (১১) ও জারিন (৬)। আশিকুল স’ মিলসহ তামাক, পাট ও রসুন ব্যবসা করতেন।
প্র্যক্ষদর্শী বিউটি বেগম বলেন, আশিকুলকে বাড়ির দরজার সমানে পড়ে থাকতে দেখে আমি দৌড়ে বাড়ির ভেতরে ভাবী ও তার বাচ্চাদের ডাকাডাকি করি। কিন্তু তাদের কোনো সারাশব্দ না পাওয়ায় বারান্দার দিকে এগিয়ে গিয়ে রক্ত দেখতে পাই। এরপর দেখি আশিকুল ভাইয়ের গলা দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। এসময় আমি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে
আশিকুল ভাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং বাড়ির থাকার ঘরের বিছানায় তহুরা ভাবী ও তার দুই মেয়েকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।
আশিকুরের চাচাতো ভাই জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, আমি খবর পেয়ে দ্রুত চলে আসি। এসে দেখি ভাইয়ের গলা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।
তারপর সবাই মিলে ভ্যানে তুলে তাকে দ্রুত নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে পাঠাই। এরপর সেখান থেকে রংপুরে পাঠানো হয়। এরপর ভাবী ও তাদের দুই মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে ঘরে গিয়ে দেখি বিছানায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছে।’ ঘটনার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশিকুল ভাই ‘স’ মিলের ব্যবসার পাশাপাশি রসুন,পাট, তামাক এর স্টোক ব্যবসা করতেন। এবার
তিনি ব্যবসায় প্রচুর টাকা লস করেছেন। পাশাপাশি ব্যাংকে ঋণ ছিল তার। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থের পাশাপাশি অসুস্থতার কারণে তিনি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন।
আশিকুলের ছোট বোন সাথী আক্তার বলেন, ভাইয়া দীর্ঘ ছয় মাস ধরে কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত। শ্বশুড়বাড়ি থেকে আমি প্রতি সপ্তাহে এসে ভাইয়ার খোঁজখবর নিয়ে যেতাম। গতকালও ভাবির সাথে আমার কথা হয়। ভালোই কথা বলছিলো। কিন্তু কী কারণে আজ এমন ঘটনা ঘটালো তার কোনো কূ-কিনারা খুঁজে পাচ্ছি না।
নীলফামারী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভিরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে কিনা সেটি ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
আশিকুল হক বাবু মোল্লা বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ও সিআইডি পুলিশ কাজ করছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।