সৈয়দপুরে আলুক্ষেতে লেট ব্রাইট রোগ কৃষি অফিস নির্বিকার, দিশেহারা কৃষক
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে শীত, কুয়াশা ও মাঝারি শৈত্য প্রবাহের কারণে আলুক্ষেতে পচন রোগ বা লেট ব্লাইট (নাবি ধসা) দেখা দিয়েছে। বারবার বালাইনাশক স্প্রে করেও তেমন ফল না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন আলু চাষিরা। এসব ওষুধের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় আবাদ নিয়ে চরম হতাশায়।
নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর, কিশোরগঞ্জ ও জলঢাকা উপজেলা আলু চাষের জন্য উৎকৃষ্ট। এর মধ্যে সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জে এবার ব্যাপক আলু আবাদ করা হয়েছে। সৈয়দপুরের কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বাঙালিপুর ও বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় আলুক্ষেতে ওষুধ স্প্রে করতে দেখা গেছে কৃষকদের।
কৃষকরা জানান, ক্ষেতে নাবি পচা রোগ দেখা দেয়ায় বারবার ছত্রাকনাশক স্প্রে করছেন। কিন্তু কুয়াশা ও বৃষ্টির কারণে গাছ পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে। ফলে পর দিন আবারও স্প্রে করতে হচ্ছে। এরই মধ্যে কেউ কেউ তিন থেকে চার বার স্প্রে করেছেন জমিতে। এতে আলুক্ষেত নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।
উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের তোকদারপাড়ার কৃষক সাদ্দাম বলেন, এ বছর ২ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছি। প্রতিটি জমিতে শীত ও কুয়াশার কারণে লেট ব্রাইট রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগের কর্মীরা আমাদের পাশে নেই। কীটনাশক দোকানের মালিকের পরামর্শে আলুর জমিতে ওষুধ স্প্রে করছি। কিন্ত খুব একটা কাজ হচ্ছে না।
উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের কাচারীপাড়ার কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, আমাদের এলাকায় আলুক্ষেতে ব্যাপক আকারে লেট ব্রাইট দেখা দিয়েছে। শীত ও কুয়াশার কারণে প্রতিদিনই জমিতে স্প্রে করতে হচ্ছে। ছত্রাকনাশক ওষুধের যে দাম তাতে কুলাতে পারছি না। সেই সাথে এই ঠান্ডায় শ্রমিকরা কাজ না করায় মহাবিপদে পড়েছি।
উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের শ্বাষকান্দর এলাকার কৃষক খয়বর হোসেন জানান, আক্রান্ত ক্ষেতে একাধিকবার বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ছড়িয়েও তেমন কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। সব জাতের আলুক্ষেতেই এবার এ রোগের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এই আবহাওয়া চলতে থাকলে আলু চাষ করে লাভ দুরের কথা, বীজের টাকাও উঠবে না।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ বলেন, এবছর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ১ হাজার ২৯২ একর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলুর আবাদ করা হয়েছে। শীত ও কুয়াশায় কিছুটা ক্ষতি হলেও বড় ধরণের ক্ষতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পাশে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আলুখেতের জন্য সবচেয়ে বেশি শঙ্কার কারণ ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশা বেশি দিন থাকলে আলুখেত ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হয়। আমরা সব সময় কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পরামর্শ দিচ্ছি। বৈরি আবহাওয়া কেটে গেলেই এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।