নীলফামারীতে ৪৫ লাখ টাকার বাণিজ্য করতে লোক দেখানো নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন
নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি:
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করার অভিযোগ উঠেছে ভেড়তেড়ি কামাল উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সুপারের বিরুদ্ধে। গত ১৩ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার কথা থাকলেও সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে গাড়ি থেকে না নেমে চলে যান ডিজির প্রতিনিধি।
পরবর্তীতে আবারও পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। গতকাল শুক্রবার সকালে অফিস সহকারী কাম- কম্পিউটার, নিরাপত্তা প্রহরী ও আয়া পদে লোক দেখানো এ নিয়োগ সম্পন্ন করেন তারা। পত্রিকায় যেন খবর প্রকাশ না হয় এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক মোখলেছার রহমান।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল আটটায় পরীক্ষা নেয়ার কথা থাকলেও ৮ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত কেউ মাদ্রাসায় উপস্থিত হননি। সকাল প্রায় ৯টায় ডিজির প্রতিনিধি মাদ্রসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রাজিবুল আহসান ও মাদ্রাসা সুপার নুহু উল ইসলাম একটি মাইক্রোবাসে প্রতিষ্ঠানে আসেন।
এসেই তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা নেয়া শুরু করেন তারা। নিয়োগ পরিপত্রে বলা আছে প্রতিষ্ঠানে এসে পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করতে হবে। কিন্তু তারা আগে থেকেই প্রশ্নপত্র তৈরি করে নিয়ে আসেন। পরীক্ষা শুরুর আগে দুজন প্রার্থী ছাড়া অন্যদের প্রবেশপত্র সাথে ছিলনা, কোনো পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেখে চাকরির আবেদন ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন প্রশ্ন করা হলে তারা সঠিক উত্তর দিতে পারেননি চাকরি প্রত্যাশীরা।
একটি সূত্র জানায়, ডিজির প্রতিনিধি গত ১৯ অক্টোবর রাতে সৈয়দপুর এয়ারপোর্টে অবতরণ করেন। সেখান থেকে তিনি রাত্রীযাপনের জন্য নীলফামারী সার্কিট হাউসের উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং রাতের মধ্যে ভেড়াভেড়ি কামাল উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোখলেছার রহমান ও সুপারের উপস্থিতিতে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করেন তারা।
গতকাল সকালে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়ার জন্য উত্তরপত্র রেডি করা হয়। যা নিয়োগ পরীক্ষার সময় খাতা পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন।
পুটিমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটন জানান, এই প্রতিষ্ঠানে কোনো ছাত্রছাত্রী দেখিনা আমরা এখানে ওনারা সবাইকে চাকরি দিতে চায় টাকা নেয়। আপনারা রিপোর্ট করেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আমি এর জবাব দেবো। তিনি আরও বলেন, তিনটি পদের বিপরীতে টাকা নিয়েছেন ১৩ জনের কাছে।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপার নূহ উল ইসলামের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে, সাংবাদিক পরিচয় পেয়ো বাস্ত আছি বলে তিনি লাইন কেটে দেন। টাকার বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগের ব্যাপারে জানতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রাজিবুল আহসানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকার পরও আপনি কিভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে, ডিজির প্রতিনিধি মাদ্রসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নন) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম কোনো সদুত্তর না দিয়ে দ্রুত মাইক্রোবাসে উঠে ঘটনাস্থ ত্যাগ করেন।