“দাবি মোদের একটাই, চাকরি স্থায়ীকরণ চাই”
জাহিদুল হাসান,জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরের সামনের রাস্তায় প্রায় দুই ঘন্টা যাবত মানববন্ধন করেছেন দৈনিক মজুরি ভিত্তিক নিয়োজিত কর্মচারীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট একটি স্বারকলিপিও জমা দেন বলে জানান তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের কোন মূল্যায়ন নেই। দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কর্মচারী মানেই আপনি কলুর বলদ। ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে তোমাদের চাকরী স্থায়ী হবে এমনটা বলে চাকরী দেয়া হয়েছে। এখানে চাকরি না হলে হয়তো এই কথাটা কতোটা মিথ্যা বুঝতাম না। চাকরীতে যোগদানের পর ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম কোন চোরাবালিতে আমরা পড়েছি। আপনাকে দিয়ে সব কাজ করানো হবে। এমন কি স্যারদের ব্যক্তিগত কাজও যেমন স্যারদের ছেলে-মেয়ে স্কুল থেকে আনা নেয়া, ঘরের বাজার ইত্যাদি। যদি আপনি তা না করেণ তাহলে তাহলে আপনার কোন সুযোগ সুবিধা এই খানে নেই। স্থায়ী চাকরীজিবীদের এমন হুকুম করলে তারা সাফ জানিয়ে দেয় পারবো না।
বক্তারা আরও বলেন, ১৫ থেকে ২০ দিনের হাজিরা আমরা পাই মানে ৯ থেকে ১৫ হাজার টাকা যা দিয়ে এ বাজারে নিজেই চলা যায় না। আমাদের যাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জন আমাদের সংসার চালাতে হয় তাদের সংসার কি ভাবে চলে? স্থায়ীদের বছরে ২০ দিন ছুটি থাকলেও আমাদের কোন ছুটি নাই। অসুস্থতার জন্য যদি আমরা আসতে না পারি আমাদের হাজিরা থেকে কাটা যায়। এমনি সামান্য বেতন তা থেকে যদি হাজিরা কাটে থাকে কি? কিছুদিন আগের কথা আমার এক সহকর্মী অসুস্থতার কারণে বেশ কিছুদিন অফিসে আসতে পারে নাই তার বেতন কাটা যায় কে কান্না করতে করতে বলে ভাই আমার সংসার আমার উপার্জনে চলে, আমি অসুস্থতার জন্য আমার অনেক খরচ হয়েছে চিকিৎসা বাবদ এর মধ্যে এই মাসে বেতন পাই নাই আমাকে এই মাসে না খেয়েই থাকতে হবে।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া একাধিক বক্তা বলেন, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় দিয়েছি এই আশায় যে জবি একদিন আমাদের কিছু দিবে। আমরা অন্য কোথাও চাকরীর জন্য ও চেষ্টা করি নাই কারন আমাদের আশা দেয়া হচ্ছে। কিছুদিনের ভিতর চাকরী হবে। কিন্তু কিছু কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আমাদের চাকরী স্থায়ী করার দাবির বাধা হয়ে দাড়ায়। মন্ত্রনালয় কর্তৃক অনুমোদিত অরগানোগ্রামে ২০১৯ সালে জবিতে যেই পরিমান কর্মচারী থাকার কথা তা ২০২৩ সালেও পূরণ হয়নি। অনুমোদিত পদ ছাড়করণে কার বা কাদের সমস্যা তা প্রশ্নবিদ্ধ।
মানববন্ধন শেষে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানান, আমরা এক এক জন ৮-১২ বছর যাবৎ চাকরী করছি। আমরা সেই আগের জায়গাই পরে আছি। আমাদের চাকরীকাল গণণা হচ্ছে না। কোন প্রকার ইনক্রিমেন্ট হয় না। কিন্তু স্থায়ীদের। চেয়ে দ্বিগুণ কাজ আমাদের করতে হয় অফিস টাইমের পরও কাজ করতে হয় কিন্তু কোন প্রকার অভারটাইম বা এক্সটা কোন টাকা আমরা পাই না। আমরা অতিরিক্ত কোন কাজ করতে অপরাগতা প্রকাশ করলে আমাদের উপর অনেক চাপ সৃষ্টি করা হয় এবং আমাদের বধ্য করা হয় করতে। প্রশাসনের কাছে আমাদের যৌক্তিক দাবি অরগানোগ্রামে অনুমোদিত পদের বিপরীতে আমাদের চাকরী দেয়া হয়েছে তাই আমাদের চাকরী অতি দ্রুত স্থায়ী করতে হবে। আমাদের দাবী মানতে হবে। অন্যথায় আমরা কর্মবিরতি দিব তাতেও যদি কাজ না হয় আমরা আমরণ অনসনে যাব। বেচে থাকার সকল রাস্তা তো আমাদের এমনি বন্ধ হয়ে গেছে। তাই যদি চাকরী না হয় আমরা মৃত্যুকেই বেছে নিব।