সিংগাইর কালিগঙ্গা নদীতে কচুরিপানার জট, এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ নৌযান
অপসারণে কাজ করছেন উপজেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবীরা ! সিংগাইর কালিগঙ্গা নদীতে কচুরিপানার জট, এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ নৌযান
মুহ.মিজানুর রহমান বাদল, সিংগাইর, মানিকগঞ্জঃ
মানিকগঞ্জের সিংগাইর কালিগঙ্গা নদীতে কচুরিপানা আটকে যাওয়ায় নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধে হয়ে গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নদী পথে যাতায়াতকারী সুবিধাভোগীরা। নদীর জটবদ্ধ কচুরিপানার ওপর দিয়ে হেঁটে কৌতূহলী লোকজন পাড় হচ্ছেন। এতে যে কোনো সময় পানিতে ডুবে প্রাণহানির আশংকা করছেন অনেকেই।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলা মাসিক আইনশৃংখলা সভায় জামশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী কামরুজ্জামান বিষয়টি তুলে ধরলে উপজেলা প্রশাসন আমলে নিয়ে অপসারণের কাজ শুরু করেন। সর্ব শেষ আজ শুক্রবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কচুরিপানা আপসারণের কর্মযজ্ঞ চলছে।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার দক্ষিণ পাশ ঘেঁষে পূর্ব- পশ্চিমে বয়ে যাওয়া স্থানীয়রাসহ দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের লোকজনের নদী পথে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম নৌপথ কালিগঙ্গা নদী। এ নদীর জামশা
ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে কচুরিপনার এমন ভয়াবহ জটের সৃষ্টি হওয়ায় সকল নৌযান বন্ধ রয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে কচুরিপানা অপসারণে স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন উপজেলা প্রশাসন। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউএনও ও ফায়ার সার্ভিসের
একটি টিম।
স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহ পূর্বে পানির সঙ্গে পশ্চিমের উজান থেকে নেমে আসা কচুরিপানা জামশা ব্রিজের পিলারে আটকে যায়। নদীতে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে পর্যায়ক্রমে এ কচুরিপানা স্তরে স্তরে জমা হয়ে প্রায় তিন ফুটের মত স্তপে পরিণত হয়েছে। স্তপ এতটাই শক্ত হয়েছে যে এতে নদীতে নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। আটকা পড়ে থাকতে
দেখা গেছে মালবাহী কয়েকটি ট্রলার, বাল্কহেড ও ভাসমান বাঁশের চালা।
কচুরিপানা ওপর দিয়ে কৌতূহলী লোকজনকে দেখা গেছে নদীর এপার থেকে ওপার যাতায়াত করতে। কিশোর-যুবকদের করছে খেলাধুলা । এছাড়া স্থানটিতে ভীড় করে আছে ঘুরতে আসা শত শত লোকজন । এরা কেউ লাইভ করছে, কেউ
কেউ ছবি তুলতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। ইতিমধ্যে নেট দুনিয়ায় কচুরিপনার ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ছে।
এদিকে, নৌপথে কোরবানির পশুবাহী নৌযান চলাচলে অসুবিধার চিন্তা করে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কচুরিপানা অপসারণে নিতে ফায়ার সার্ভিসের টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন- সিংগাইর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিপন দেবনাথ। কচুরিপানা অপসারণের কাজে ফায়ার সার্ভিসের টিম এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে এ সময় তারা নিজেরাও সরাসরি অংশ নেন।
শুক্রবারও চলছে নদীকে সচল করতে কচুরিপনা অপসারণের কাজ। নদীপথে আটকে থাকা ভুক্তভোগী ও স্থানীয় বাসিন্দারা শংকিত হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত এ সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপন দেবনাথ বলেন, বাল্কহেড নিয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে করে কচুরিপানা অপসারণ কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি, শীঘ্রই নৌযান চলাচল স্বাভাবিক করতে পারবো।