প্রেমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ প্রেমিকার বাবা, চাচা ও ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে
তনুজা শারমিন তনু, প্রতিনিধি:
দিনাজপুর পার্বতীপুর ৬নং মোমিনপুর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের আনসারিয়া মাদ্রসা সংলগ্ন হয়বৎপুর সেজোপাড়ায় প্রেমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকার বাবা চাচা ও ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
১৭ জুন শনিবার ঘটনাস্থল হয়বৎপুর আনসারিয়া মাদ্রাসার সংলগ্ন পূর্বপার্শ্বে আলতাফ হোসেনের বিবাহিতা মেয়ে.. (সৃষ্টি ছদ্মনাম) ১৮ এর সাথে ইউসুফ আলীর (২৪) পিতা- মোঃ মাহবুব হোসেন, গ্রাম- হয়বৎপু চৈতপুকুর এর মধ্যে দীর্ঘদিনের গভীর প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। ইতি পূর্বে তাদের সম্পর্ক উভয় পরিবারের কেউ মেনে না নিলে তারা পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপনে ছিলো।
স্থানীয় ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় আলতাফ হোসেন মেয়েকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলে মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্যত্র আনুমানিক ছয় মাস আগে গোপনে বিয়ে দেন। মেয়ে জামাই সরকারি চাকুরীজিবি হওয়ায় বয়স এবং বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখেন।
এদিকে মেয়ে (সৃষ্টি ছদ্মনাম) বিয়ের পরেও প্রেমিক ইউনুসের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন না করে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে মেয়ের বাবা আলতাফ ছেলেকে বোঝানোর কথা বলে কৌশলে বাড়িতে ডেকে আনেন।
এরপর মেয়ের বাবা চাচা মেম্বার নূর আলম মিলে ইউসুফকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে ঘরে বন্দি করে রেখে ছেলের বাড়িতে খবর দেন। এই বলে যে, ছেলে ইউনুস তাদের মেয়েকে নিয়মিত উত্ত্যক্ত করার কারনে তাকে আটকিয়ে রাখা হয়েছে।
এমতাবস্থায় যদি ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় পেতে চান তো এখনি চলে আসেন। বিচারের নামে নাটক তৈরি করে মেয়ের সংসার ভাঙ্গার অপরাধে ছেলে পক্ষের কাছে ৪ লক্ষ টাকা দাবি করেন।
এই অবস্থায় ছেলের বাবা মাহবুব হোসেন ছেলেকে দেখতে চান এবং মেয়ে মুখ থেকে শুনতে চান মূল ঘটনা। আরো বলেন যদি আমার ছেলে দোষ করে থাকে তবে তারা যে কোন শর্ত শাস্তি হিসেবে মেনে নেবেন।
এমন প্রস্তাবে রাজি না হয়ে মেয়ের বাবা চাচা মেম্বার সহ উত্তেজিত হয়ে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন। বেরিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে তারা বদ্ধ ঘরের টিনের ছিদ্র দিয়ে দেখতে পান ইউনুসকে মেরে ঘরের মেঝেতে ফেলে রেখেছেন। তৎখানাত তারা বাড়িতে ফিরে গিয়ে আরো লোকবল সংগ্রহ করে ছেলেকে উদ্ধার করতে এলে দেখে তারা কেহই বাড়িতে নেই। ইউনুসের নিথর মৃত দেহ পড়ে আছে ঘরের মেঝেতে।
সুপরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়ে বাড়ির হাঁস, মুরগী, গরু, ছাগল সহ প্রয়োজনীয় সকল মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নেয়। এবং বাড়িতে তালা বদ্ধ করে সকলে আত্মগোপন করেন। ততক্ষণে প্রেমিক ইউসুফ আলীকে উদ্ধার করতে আসা সকলের বুঝতে বাকি থাকেনা যে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পার্বতীপুর মডেল থানা অবহিত করলে খবর পেয়ে পার্বতীপুর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসনাত খান ও সঙ্গীও অফিসারগন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এবং সেখানে মৃতদেহ উদ্ধার করে লাশ থানায় নিয়ে আসেন।
বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক ঠান্ডা মাথায় কৌশলে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড মানুষ হয়ে কি করে মানুষ করতে পারে! তারাতো অপরাধ একটা মাত্র করেছিলো উভয়ে উভয়কে ভালোবেসে আর সেই ভালোবাসার পরিনাম নির্মম হত্যা!
ReplyReply allForward
|