আমন ধান চাষে খরচ বৃদ্ধিতে হিমশিম খাচ্ছেন দুমকির কৃষকরা
মো.সুমন মৃধাঃ দুমকি(পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
আমন ধান চাষে পূর্বের তুলনায় ব্যাপক পরিমাণ খরচ বৃদ্ধিতে বেশ হিমশিম খাচ্ছেন পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার কৃষকেরা। তাদের আশঙ্কা রয়ে গেছে চষাবাদ খরচ আর উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল পাওয়া নিয়ে।
উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রোপা আমন আবাদের ধুম চলছে। বিস্তৃর্ণ ক্ষেতের সবুজ পাতায় বাতাসে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন।
জমি তৈরি, আগাছা পরিষ্কার, চাষাবাদ, বীজ তুলতে আর জমিতে চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এবছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলেও জোয়ারের পানি আর সৃষ্টিকর্তার কৃপার ওপর ভরসা করে আমনের সবুজ মাঠে সোনালী স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, আমন চাষের ভরা মৌসুম অনেক আগে শুরু হলেও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় বিলম্ব হয়ে গেছে।
এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ভাদ্রের পুরো মাস জুড়েই চলবে চারা রোপণ কাজ। আবার অগ্রহায়ণ মাসের শুরু থেকে পৌষ মাসের প্রথম শেষ সপ্তাহের মধ্যে আমন ধানা কাটা ও মাড়াই শেষে গোলায় উঠবে সোনালী ফসল এমনটাই প্রত্যাশা কৃষকদের।
উপজেলা কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এবছর উপজেলার ৫ ইউনিয়নে ৬৬৪০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের কৃষক নাসির গাজী ও মতি হোসেন জানান, বাপ-দাদার জমি। তাই চাষ না করেও পারছি না।কৃষিতে এত টাকা খরচ করে জমি রোপন করে ধান বা চালের ন্যায্য মূল্য পাইনা।
উপজেলার রাজাখালী গ্রামের শ্রমিক মুনসুর হেলাল বলেন, প্রকৃতিতে চলছে প্রখর রোদ ও তীব্র দাবদাহ; বৃষ্টি নেই বললেই চলে। অনেক কষ্ট করে আমরা ধান চারা রোপন করছি। আর বর্তমানে বাজারে সবকিছুর দাম বেশি তাই মজুরি বেশি না নিলে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চলবো কি করে। তাই আমরাও আমাদের কাজের মজুরি বৃদ্ধি করেছি, ভাই।
উত্তর রাজাখালি গ্রামের কৃষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করে জানান, আমি এক সময় লাঙ্গল দিয়ে হাল চাষ করতাম। আমি একজন প্রকৃত কৃষক হওয়া সত্ত্বেও সরকারের তরফ থেকে দেয়া সার,বীজ ও কীটনাশক পাই না।
তারা আরও জানান, বীজ করতে অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। আর এখন একজন বদলাকে( দিন মজুর) দৈনিক ৭০০ টাকা দিতে হয়। শতাংশ প্রতি চাষের জন্য দিয়েছি ৮০ টাকা যা পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি। এরপর আবার সার,কীটনাশক ইত্যাদি তো রয়েই গেছে।
ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধিতে কৃষক কি করতে পারেন এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহের মালিকা জানান, আমরা মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদেরকে সঠিক সময়ে সঠিক মাত্রায় সার ও কীটনাশক ব্যবস্থাপনায় উদ্ভুদ্ধ করে যাচ্ছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে আমন ধানের বাম্পার ফলন আশা করছি।