শরণখোলায় আমনের বাম্পার ফলন
আবু-হানিফ, বাগেরহাট অফিসঃ
বাগেরহাটের শরণখোলায় নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশানুরূপ ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক। মাঠে মাঠে পাকা ধান কাটছে কৃষি শ্রমিকরা। এ বছর কৃষি বিভাগ বাম্পার ফলনের টার্গেট নিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি ও পোকার আক্রমন থেকে ফসল রক্ষার জন্য কৃষকদের নানা ভাবে সচতন মূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। চলতি মৌসুমে আমন ধান চাষে ৭ লাখ ৪৯ হাজার ৫৫০ মন ধানের সম্ভব্য উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করলেও উৎপাদন হবে তার চেয়ে বেশি।
উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা মশিউল আলম জানায় চলতি আমন মৌসুমে ৬৯ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ব্রিধান ৫২, ৪৯, ৭১, ৭৬ ও বিআর ১১ এবং স্থানীয় জাতের মোটাধান। চলতি আমন মৌসুমে বীজতলা তৈরির পর একটানা ৪/৫ দিন প্রবল বর্ষনে অধিকাংশ কৃষকদের বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। চরম সংকট দেখা দেয় বীজ ধানের। এক পর্যায়ে উপজেলা কৃষি অফিসারের প্রচেষ্টায় তাৎক্ষনিক ৬ হাজার কেজি ব্রিধান ৭১ সংগ্রহ করে ডিলারের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে কৃষকদের মাঝে সরবারাহ করা হয়। কৃষকরা নতুন করে বীজতলা তৈরি করে এবং অনেকে অন্য এলাকা থেকে বীজ কিনে জমিতে রোপন করে। গত এক বছরে প্রায় বোরো ৩ লাখ ৫১ হাজার কেজি, আউশ ২৬ লাখ ১৫ হাজার কেজি উৎপাদন হয়েছে। চলতি আমন মৌসুমে ১ কোটি ৯৯ লক্ষ ৬৭ হাজার কেজি ধান উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন।
উত্তর কদমতলা আইপিএম কৃষক ক্লাবের সভাপতি মাষ্টার মিজানুর রহমান লাকুরতলা গ্রামের কৃষক এমাদুল হক খোন্তাকাটা গ্রামের আঃ হক রাজৈর গ্রামের কৃষক বাবুল হাওলাদার ও রাজাপুর গ্রামের কৃষক মোঃ হাসেম জানায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে এ বছর ধান ভালো না হওয়বার সম্ভবনা ছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমতে বৃষ্টিতে কিছু সমস্যা হলেও বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় ও বহিরাগত কৃষি শ্রমিকরা জানায় গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় ভাগে ধান কেটে বেশি পাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ওয়াসীম উদ্দীন বলেন, মুজিব শতবর্ষকে সামনে রেখে এ বছর বাম্পার ফলনের টার্গেট করে কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, ১৫০ জন চাষীকে ধানের প্রদর্শনী প্রদান, প্রতি ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশ করা হয়। এ ছাড়া ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য উপজেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে সচেতনতামূলক ভিডিও চিত্র প্রদর্শন এবং লিফলেট বিতরন ও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। যে কারনে প্রকৃতিক দুর্যোগসহ নানা প্রতিকুলতার মাঝেও কৃষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের ফলে বাম্পার ফলন হয়েছে। খাদ্য বিভাগ চলতি সপ্তাহে ধান কেনা শুরু করবেন। ক্রয় করবেন ৯৭৭৫ মন ধান। দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৮০ টাকা।