ঠাকুরগাঁওয়ে ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত
মোঃ জাহিদ হাসান মিলু, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: সর্ব উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। এই জেলা হিমালয়ের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় প্রতিবছর শীতের প্রকোপ বেশি হলেও অন্যান্য বারের চেয়ে এবার একটু বেশি শীত।
নভেম্বর থেকে এ জেলায় শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকলেও গত সপ্তাহ থেকে জেলায় শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। রাত থেকে ঝির ঝির বৃষ্টির মতো ঝড়তে থাকে কুয়াশা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্য্যরে দেখা মেলেনা। দুপুর ১টার পরে একটু-আধটু সূর্য্যরে দেখা মিললেও তাপমাত্রা থাকে কম। এ অবস্থায় খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে জেলায় বোরো আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
গত কয়েকদিন থেকে ও ০৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার জেলার বিভিন্ন স্থান ও এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
এই ঠান্ডায় মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেড় হচ্ছে না ও ঠিকভাবে কাজ কর্মও করতে পারছেন না অনেকে। এতে শ্রমজীবী দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষরা বিপাকে পরেছে বেশি।
ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসের কারণে বোরো ধানের বীজতলা তৈরী ও চারা গজানো নিয়ে বিপাকে পরেছেন চাষীরা। কুয়াশার জন্য ধানের চারা ঠিকভাবে গজাচ্ছেনা ও গজালেও চারা হলদে হয়ে যাচ্ছে বলে জানান, কৃষকরা।
অন্যদিকে শীত জনিত কারণে হাসপাতালে শিশুসহ সব বয়সী রোগীর চাপ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন, ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ রকিবুল আলম (চয়ন)।
ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তায় অটো রিক্সা চালক শাহজাহানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রচুর ঠান্ডায় রিক্সা চালাইতে ও গাড়ির জমার টাকা ঠিক মতো আয় করতে পারিনা। এমন অবস্থায় কিভাবে মালিককে জমা দিবো ও সংসার চালাবো। সরকার থেকে কিছু করে দিলে ভালো হইতো। ঠান্ডায় কম্বল দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন কম্বল বা শীতের কাপড় পাইলাম না।
এই ঠান্ডায় কৃষিকাজ করতে পারিনা হাটবাজারেও যাইতে পারিনা। সকাল থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত রোদের/সূর্যের দেখা মিলেনা বলে জানান, সদর উপজেলার কৃষক কেটু রাম বর্মন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, মঙ্গলবার সর্বনি¤œ গড় তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রী ও সর্বোচ্চ ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস নির্ণয় করা হয়। এছাড়াও ঠাকুরগাঁও কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, অতিরিক্ত শীতের কারণে বোরো ধানের চারার ক্ষতি হতে পারে। সে ব্যাপারে আমরা চারা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা, জিপসাম প্রয়োগ, বীজতলার পুরোনো পানি অপসারণ করে নতুন পানি দেওয়াসহ এবিষয়ে সকল প্রকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সূত্র মতে, ইতিমধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করা হয়েছে। যেহেতু প্রতি বছর ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের প্রকোপ বেশি হয় তাই সরকারের কাছে চাহিদা অনুযায়ী আরও ১ লক্ষ কম্বল ও ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।