খাল দখলে জলাবদ্ধতা, আড়াই কিলোমিটার সড়কে খৈরাশবাসীর দু:খ

আলী। তার মতো গ্রামের সবারই একই ক্ষোভ আর দু:খ। কিন্তু তাদের এ দুর্ভোগের কথা শোনার মতো যেন কেউই নেই। গ্রামের একটি রাস্তা নিয়ে বছরের পর বছর দূর্বিষহ জীবনযাপন করছেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের প্রত্যন্ত খৈরাশ গ্রামের মানুষ। বারবার জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন নিবেদন করেও পরিত্রাণ মেলেনি গ্রামবাসীর।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খৈরাশ দক্ষিণপাড়া থেকে পুকুরপাড়া পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার কাঁচা সড়ক। কাদা পানিতে তলিয়ে আছে পুরো সড়ক। হাঁটু পরিমাণ কাদা-পানির মধ্য দিয়ে চলাচল করছে মানুষ। পানি বের হতে না পেরে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। কোনো যানবাহন নিয়ে এ সড়ক দিয়ে যাওয়া যেন চাঁদে যাওয়ার মতো কঠিন। সড়কের পাশে অনেকের বাড়ি ঘরেও পানি উঠেছে।
গ্রামের বাসিন্দা মহসীন প্রামানিক বলেন, ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের যোগাযোগের একমাত্র সহজ সড়ক এটি। গ্রামের এই অংশের মধ্যে প্রায় এক হাজার মানুষের বসবাস। এই সড়ক দিয়েই পাবনা ও নাটোরের অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষ চলাচল করে। কিন্তু সড়কটি পাকা না হওয়ায় এবং জলাবদ্ধতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজারো মানুষ।
সাগর পারভেজ বলেন, গত ৬ বছর ধরে এই পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের বসবাস করতে হচ্ছে। ১২ মাসের মধ্যে অন্তত ৭ মাস কাদা পানির মধ্যে থাকতে হয়। এ দূর্ভোগের যেন শেষ নেই। বাড়ি থেকে হাট-বাজারে যাওয়ার প্রয়োজন হলে রীতিমতো নিজের সাথে যুদ্ধ করতে হয়।
এস এম ওয়াহেদ আলী বলেন, গ্রামের পাশ দিয়ে একটা জোলা বা ক্যানেল ছিল। সেই ক্যানেল দিয়েই মুলত পানি নেমে যেত। কয়েক বছর ধরে সেই ক্যানেল দখল করে বাড়িঘর নির্মাণ করেছে অনেকে। অনেকে ক্যানেল দখল করে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছে। যে কারণে পানি বের হওয়ার কোনো জায়গা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। দখলদারদের উচ্ছেদ করে ক্যানেল খনন করা গেলে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
ক্যানেলের জায়গা দখল করে তার উপর বাড়ি নির্মাণ করে বসবাসকারীদের একজন আব্দুল খালেক বলেন, সবাই দখল করে বাড়ি করে বসবাস করছে, আমরাও করছি। এখন সরকার যদি সবাইকে তুলে দিয়ে জোলা খনন করে তাহলে আমরাও উঠে যাবো।
গ্রামের এক নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোজাফফর মন্ডল বলেন, এ বিষয়ে আমরা উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। গ্রামের মানুষের কথা শুনতে হয় আমাকে। কবে নাগাদ এ দূর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ মিলবে বলতে পারছি না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ সৈকত ইসলাম বলেন, ক্যানেলটি যদি সরকারি হয় তাহলে খনন করে পানি বের করার ব্যবস্থা করা যাবে। আর কাঁচা রাস্তার জন্য এডিপি থেকে বরাদ্দ নিয়ে কাজ করা হবে। তারপরও সবকিছু আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো কি করা যায়।
মোহাম্মদ শাহীনুর রহমান, পাবনা।