ভাড়া দেওয়া হচ্ছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন!
চরম অর্থসঙ্কটে ভুগছে পাকিস্তান। এমতাবস্থায় আর্থিক সংকট মেটাতে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল পাকিস্তান সরকার।
সঙ্কট মেটাতে হাতিয়ার করা হচ্ছে খোদ প্রধানমন্ত্রী ইমরান থানের বাসভবনকে। এই বিখ্যাত সরকারি ভবনকে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সেদেশের সরকার। যা নজর কেড়েছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলেরও।
এমনকি কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর আবাসনের ভাড়া থেকে আরও ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব, তা নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে দ্রুত আলোচনা হবে বলেও জানা গেছে। তবে প্রাথমিক ভাবে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন শিক্ষা, ফ্যাশন, বিয়ে সহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে।
এর আগে অবশ্য পাকিস্তান প্রশাসন প্রধানমন্ত্রীর আবাসনটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার প্রস্তাব এনেছিল। ২০১৯ সালের অগাস্ট মাসে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তারপরই ইমরান খান তাঁর সরকারি বাসভবন ছেড়ে দেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের জন্য। কিন্তু, সেই প্রস্তাব এখন অতীত।
এদিকে ২০২১ সালের গোড়া থেকেই চরম অর্থসঙ্কটে ভুগছে পাকিস্তান। সরকারের খরচ কমাতে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের রাজ্যপালদের জন্যও বেশ কয়েকটি ঘোষণা করা হয়েছে সরকারের তরফে। তারাও ইতিমধ্যেই তাঁদের বাসভবন ছেড়ে অন্যত্র থাকছেন। এর আগেও একাধিকবার পাক প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো অর্থ সরকারের নেই। সরকারি কোষাগারে অর্থাভাব মেটাতেই প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। বহুদিন ধরেই ইমরান খান প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ব্যবহার করেন না। তিনি বানী গালা বাসভবনে থাকেন।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বছরে প্রায় ৪৭ কোটি টাকা খরচ হয়। যা থেকে সাময়িক ভাবে মুক্তি চাইছে সরকার। তবে কোনও অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে যাতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের কোনও ক্ষতি না হয়, শৃঙ্খলা ও মর্যাদা লঙ্ঘিত না হয় তা দেখার জন্য বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে সরকারের তরফে। পাক সংবাদমাধ্যম সামা টিভির খবর অনুযায়ী, এই বিষয়ে দু’টি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যারা ভাড়া সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখবে এবং নিয়মশৃঙ্খলা বজায় রাখবে।
অন্যদিকে বছর দুয়েক আগে ব্রিগেডিয়ার ওয়াসিম ইফতিখার চিমার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। তারপর এবার ফের অর্থসঙ্কটের মুখে পড়ে তা ভাড়া দেওয়া হচ্ছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা সঙ্গিন । গত তিন বছর ধরেই সরকারি কোষাগারে চাপ কমাতে একাধিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রীকে। এরই ধারাবাহিকতায় নিজের বাসভবন ভাড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত।