পেগাসাস নজরদারি: রাহুল গান্ধীও বাদ যাননি

ইসরায়েলে তৈরি হ্যাকিং সফটঅয়্যার পেগাসাস ব্যবহার করে ভারতে যেসব সম্ভাব্য ফোন নম্বরে আড়ি পাতা হয়েছে, সেই তালিকায় দুইবার এসেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীর নাম।
পেগাসাস কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছে। এর মধ্যে ভারতেরই অন্তত ৩০০ রাজনীতিক, সাংবাদিক, অধিকারকর্মী, বিজ্ঞানীর নাম এসেছে, যাদের ওপর নজরদারি চালানো হয়েছে ওই স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেছে।
বলা হচ্ছে, ইসরায়েলি কোম্পানি এনএসও গ্রুপের তৈরি করা এই হ্যাকিং সফটওয়্যার কিনে নিয়ে অধিকারকর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী, রাজনীতিকদের ফোনে নজরদারি চালিয়ে আসছে বিভিন্ন দেশের ‘কর্তৃত্ববাদী’ সরকার। ভারত সরকার অবশ্য এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ফাঁস হওয়া একটি ডেটাবেইসে এই ফোন নম্বরগুলো প্রথমে পায় প্যারিসভিত্তিক সংস্থা ফরবিডেন স্টোরিজ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, পরে তারা যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান, ভারতের দ্য অয়্যারসহ ১৬টি সংবাদ মাধ্যমকে তা জানায়। তারা সবাই মিলে এই অনুসন্ধানের নাম দিয়েছে ‘পেগাসাস প্রজেক্ট’।
দ্য অয়্যারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেগাসাসের সম্ভাব্য হ্যাকিংয়ের লক্ষবস্তুতে পরিণত হওয়া যে ৩০০ ভেরিফায়েড ভারতীয় নম্বরের তালিকা তারা পেয়েছে, তার মধ্যে অন্তত দুটি নম্বর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ব্যবহার করেছেন। আর এই হ্যাকিং চালানো হয়েছে এনএসও গ্রুপের সেবা নেওয়া ‘ভারতীয় অফিসিয়াল ক্লায়েন্টের’ মাধ্যমে। গার্ডিয়ান জানিয়েছে, রাহুলের ওই দুই ফোন নম্বর সম্ভাব্য নজরদারির তালিকায় নেওয়া হয় ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে। রাজনীতির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই, কিন্তু সোশাল মিডিয়ায় রাহুলের বন্ধু- এরকম পাঁচজনের ফোন নম্বরও ওই তালিকায় আছে।
এই তালিকায় আরও এসেছে নির্বাচনী কৌশল প্রণেতা প্রশান্ত কিশোর, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনকি ভারতের নতুন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী আশ্বিনী বিষ্ণুর নামও।
সোমবার শুরু হওয়া ভারতের পার্লামেন্ট অধিবেশনে পেগাসাস কেলেঙ্কারি নিয়ে সরকারের ব্যাখ্যা দাবি করেছেন একাধিক বিরোধী দলীয় নেতা।
আর মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে রাহুল গান্ধী এক টুইটে লিখেছেন, “আমরা জানি, উনি ইদানিং কী পড়ছেন। আপনার ফোনের সব কিছুই দেখছেন।”