সাত জেলায় কঠোর লকডাউন চান স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভারত সীমান্তবর্তী সাত জেলায় লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করতে দেরি হলে সঙ্কট বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
“মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এটা পর্যালাচনা করছে। আম চাষীদের অবস্থা বিবেচনা করে হয়ত দেরি করছে। আমরা চাই দ্রুত লকডাউন দেওয়া হোক প্রস্তাবিত জেলাগুলোয়।”
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “এটা (লকডাউনের সিদ্ধান্ত) কেবিনেট (ডিভিশন) করে। আমরা আলাপ করব যে উনারা কবে থেকে লকডাউন দেবেন। কিন্তু আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, যেসব জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী, বেশি বেড়ে যাচ্ছে, সেখানে লকডাউন দিয়ে দেওয়া।”
তবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, পুরো জেলা অবরুদ্ধ করা হবে, না জেলার নির্দিষ্ট কিছু এলাকা- সেসব বিষয়ে ‘পরিস্থিতি বুঝে’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অবশ্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে স্থানীয় প্রশাসনও লকডাউনের ঘোষণা দিতে পারে, সেরকম নির্দেশনা আগেই দিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
করোনাভাইরাসের ভারতে উদ্ভূত ধরনটির কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের প্রমাণ পাওয়ায় গত ২৪ মে থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউনের বিধিনিষেধ জারি করে জেলা প্রশাসন। সোমবার তা আরও এক সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির বৈঠকে শনিবার সীমান্তের জেলাগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। ঝুঁকি এড়াতে সীমান্তবর্তী আরও সাত জেলা অবরুদ্ধে ঘোষণার সুপারিশ করা হয় বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন রোববার গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন।
এই সাত জেলা হল- নওগাঁ, নাটোর, সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও খুলনা। এসব জেলায় গত কিছুদিন ধরেই সংক্রমণ হার ঊর্ধ্বমুখী।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও ‘পরিস্থিতি বুঝে’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছিলেন।
সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, যশোর ও নাটোরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমরা চাইব যে জায়গাটিতে স্পেসিফিক্যালি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, সেই জায়গাটি শনাক্ত করতে। এমনও হতে পারে যে পুরো সাতক্ষীরা নয়, যে স্থানটিতে বেশি সংক্রমণ সেই জায়গাগুলোতে হয়ত (অবরুদ্ধ) করার চেষ্টা হবে, যাতে মানুষের জীবন জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সরকার সে বিষয়টি খেয়াল রাখছে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.এবিএম খুরশীদ আলম গত শুক্রবার জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের ভারতে উদ্ভূত ধরনটি পাওয়া গেছে, যারা কখনও প্রতিবেশী ওই দেশটিতে যাননি।
এর মানে হল, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক এই ধরনটির কমিউনিটি সংক্রমণ ঘটছে।
করোনাভাইরাসের এ ধরনটির আনুষ্ঠানিক নাম দেওয়া হয়েছে বি.১.৬১৭। মিউটেশনের কারণে এর তিনটি ‘সাব টাইপ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে পাওয়া গেছে বি.১.৬১৭.২ ধরনটি।