করোনা ভাইরাসে ভারতে একদিনে ৩৭৮০ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড
শনাক্ত রোগী সংখ্যায় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারতে এবার কোভিড–১৯ একদিনে ৩ হাজার ৭৮০ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
মহামারী শুরুর পর থেকে দেশটিতে আর কখনোই ২৪ ঘণ্টায় এত রোগীর মৃত্যু হয়নি।
বুধবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একদিনে তিন লাখ ৮২ হাজারের বেশি রোগী শনাক্তেরও খবর দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এ সংখ্যা আগের দুইদিনের চেয়ে বেশি।
শনিবার দেশটি একদিনে ৪ লাখের বেশি রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল। পরের দিন ওই সংখ্যা তিন লাখ ৯২ হাজার ৪৮৮ জনে নামে; সোম ও মঙ্গলে দৈনিক শনাক্ত ধারাবাহিকভাবে কমতে দেখে ‘সংক্রমণ কমছে’ বলে কর্মকর্তারা স্বস্তিও প্রকাশ করেছিলেন।
বুধবারের সংখ্যা তাদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দেওয়ার কথা।
সব মিলিয়ে কোভিড-১৯ এ দেশটিতে এ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে দুই কোটি ৬ লাখ ৬৫ হাজার ১৪৮ জন; সরকারি হিসাবে ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার ১৮৮ জনের।
বিশ্বজুড়ে গত এক সপ্তাহে যত রোগী শনাক্ত হয়েছে, তার ৪৬ শতাংশই ভারতে মিলেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। দেশটি গত এক সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ এ হওয়া মৃত্যুর এক চতুর্থাংশও দেখেছে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দেশটিতে যে পরিমাণ রোগী শনাক্ত হয়েছে, প্রকৃত আক্রান্ত তার ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি।
বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতাল, মর্গ ও শ্মশানে লাশের পরিমাণ দেখে ভারতে কোভিড-১৯ এ মৃত্যু সরকারি হিসাবের চেয়ে বেশি হতে পারে বলেও অনুমান করা হচ্ছে।
মার্চের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে খাদের কিনারায় এনে দাঁড় করিয়েছে। হাসপাতালগুলোতে শয্যা নেই, অক্সিজেন নেই। প্রয়োজনীয় ওষুধ মিলছে কেবল কালোবাজারেই।
অনেক রাজ্যে চিকিৎসার অপেক্ষায় থাকা অসংখ্য কোভিড আক্রান্তের মৃত্যু হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সে, হাসপাতালের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায়।
করোনাভাইরাসে দেশটির মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মহারাষ্ট্রে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫১ হাজার ৮৮০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৮৯১ জনের।
কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতেই এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ৩ লাখের বেশি।
পার্শ্ববর্তী কেরালায় মঙ্গলবার নতুন ৩৭ হাজার ১৯০ জনের দেহে প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি মিললেও মৃত্যু হয়েছে মাত্র ৫৭ জনের।
একইদিন আসামে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে, মহামারী শুরুর পর রাজ্যটি আগে কখনোই ২৪ ঘণ্টায় এত মৃত্যু দেখেনি।
শনাক্ত রোগী সংখ্যায় চলতি সপ্তাহেই দুই কোটির ঘর পার করেছে ভারত, তাদের উপরে আছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র।
ভারতজুড়ে লকডাউন আরোপে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওপর চাপ বাড়ছে।
দেশটিতে ক্রিকেটের অন্যতম বড় আয়োজন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগও অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।