২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ‘হত্যা ও গণহত্যার’ ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ৩৯ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, আমির হোসেন আমু, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
রোববার (১৯ জুলাই) সকালে প্রিজনভ্যানে করে কারাগার থেকে তাদের ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনালে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিরস্ত্র মানুষের ওপর গুলি ও সহিংসতার ঘটনায় সাতটি পৃথক মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ওই ঘটনার পর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ ও অভ্যন্তরীণ চাপে গঠিত হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যা এই ঘটনার বিচার শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়।
ট্রাইব্যুনালে হাজির ৩৯ জনের মধ্যে রাজনৈতিক নেতা ছাড়াও রয়েছেন সাবেক আমলা, পুলিশ কর্মকর্তা এবং প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—আন্দোলন দমন করতে গুলি চালানোর নির্দেশ, পরিকল্পনা এবং নির্বিচার হত্যার অনুমোদন দেওয়ার মতো অপরাধে সংশ্লিষ্টতা ছিল।
অভিযুক্তদের মধ্যে আরও রয়েছেন:
- ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, কামরুল ইসলাম
- উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী
- রাজনৈতিক নেতা রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু
- সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক
- সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম
১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেয়। অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকে ভারতে পালিয়ে ছিলেন। তবে পরে দেশে ফিরলে বা আটক হলে তাদের হাজির করা হয়। পরবর্তী শুনানিতে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে, “বেসামরিক জনগণের ওপর পরিকল্পিত আক্রমণ ও নির্বিচার গুলি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।”