রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার সকাল থেকে লাখ লাখ মানুষের ঢল নেমেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ ঘিরে। সমাবেশ শুরুর ছয় ঘণ্টা আগেই উদ্যানটি প্রায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে।
জামায়াতের দাবি, সারা দেশ থেকে প্রায় ১০ লাখ নেতা-কর্মী সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছেন। দলটির ৭ দফা দাবির পক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
সাড়ে ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত
সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ও মনোগ্রাম সম্বলিত পোশাক পরে আসা হাজারো কর্মী উদ্যানের ভেতর ও বাইরে অবস্থান নিয়েছেন। রাজধানীর হাইকোর্ট, শাহবাগ ও মৎস্যভবন এলাকায় সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে প্রবেশ করতে দেখা গেছে নেতাকর্মীদের।
২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক এই সমাবেশে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এর মধ্যে শুধু উদ্যান এলাকায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন।
মৎস্যভবন স্পটের স্বেচ্ছাসেবক টিমের প্রধান মাসুদুর রহমান বলেন, “সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের সহযোগিতা করাই আমাদের উদ্দেশ্য। কোন অঞ্চল থেকে আসা মানুষ কোন গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন, তা বুঝিয়ে দিচ্ছি।”
জামায়াতে ইসলামী তাদের ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে এই সমাবেশে, যার মধ্যে রয়েছে:
- ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ও অন্যান্য সময় সংঘটিত গণহত্যার বিচার।
- রাষ্ট্রের সব স্তরে মৌলিক সংস্কার।
- ঐতিহাসিক জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রের বাস্তবায়ন।
- জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন।
- প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন।
- প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার পদক্ষেপ।
- সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ ও ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিতকরণ।
সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা দুপুরে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ভোর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াতপন্থী কর্মীদের আগমন ঘটে। শুক্রবার রাত থেকেই অনেকে উদ্যানে জড়ো হতে শুরু করেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সমাবেশকে কেন্দ্র করে শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
সমাবেশস্থলে আগত নেতারা বলেছেন, “এই সমাবেশ শুধু জামায়াতের নয়, বরং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই।” তারা দাবি করেছেন, “এই ৭ দফা বাস্তবায়নই হবে দেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের ভিত্তি।”