মাহফুজুল হক পিয়াস, ইবি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পুকুর থেকে সাজিদ আবদুল্লাহ নামের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। মৃত্যুর প্রকৃতি নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে ১২ দফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল ১১টায় প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হন শত শত শিক্ষার্থী। কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে গায়েবানা জানাজা শেষে তারা প্রশাসন ভবন ঘেরাও, প্রধান ফটক অবরোধ এবং প্রশাসন ভবনের দেয়ালে বিভিন্ন দাবি সংবলিত লেখালেখি (দেয়াল লিখন) করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার অভাব ও প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার কারণেই এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তারা বলেন, এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার পরও উপাচার্য বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন।
শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- মৃত্যুর দ্রুত তদন্ত ও প্রতিবেদন প্রকাশ, পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভির আওতায় আনা, পর্যাপ্ত স্ট্রিট লাইট স্থাপন, আবাসিক হলে প্রবেশ ও প্রস্থানে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা। এছাড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, বহিরাগত নিয়ন্ত্রণে পরিচয় যাচাই প্রক্রিয়া, তদন্ত কমিটিতে শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি, প্রশাসনের নিয়মিত উপস্থিতি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করাসহ সাত কর্মদিবসে দাবি বাস্তবায়ন এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৬টার দিকে শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুরে সাজিদ আব্দুল্লাহর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল সাড়ে ৬ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ইবি থানা পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। সাজিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শহিদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯ নং রুমে থাকতেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায়। সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যু নিয়ে অনেকের মনে উঠেছে নানা প্রশ্ন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শহীদ জিয়াউর রহমান হল কর্তৃপক্ষ আলাদা আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।