স্টাফ রিপোর্টার:
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক চুক্তি করতে প্রচলিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চর্চা ও দ্বিপক্ষীয় স্বার্থের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে চুক্তির খসড়ায় কিছু বিষয়ে উভয়পক্ষ একমত হলেও, গুরুত্বপূর্ণ কিছু শর্ত নিয়ে এখনও মতপার্থক্য রয়ে গেছে।
চুক্তির মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন আরোপিত বাংলাদেশি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার বা হ্রাসের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছে সরকার। এ লক্ষ্যে বুধবার (২ জুলাই) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
চুক্তির খসড়া ও বিরোধের বিষয়:
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে একটি শুল্ক চুক্তির খসড়া পাঠায়, যেখানে এমন কিছু শর্ত রয়েছে যা বাংলাদেশের মতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চর্চার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে তিন দফা সংশোধনী পাঠিয়েছে এবং ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (USTR) সঙ্গে তিনটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছে। চতুর্থ ও পঞ্চম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে।
চুক্তির খসড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, তারা যেসব পণ্যে ছাড় দেবে, সেই একই পণ্যে বাংলাদেশ অন্য কোনো দেশকে ছাড় দিতে পারবে না। এটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO) ‘মোস্ট-ফেভার্ড ন্যাশন’ (MFN) নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় বাংলাদেশ তা মানতে রাজি নয়।
এছাড়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করলে বাংলাদেশকেও তা অনুসরণ করতে হবে, যা ঢাকার জন্য বাস্তবসম্মত নয়।
সময় সংকট:
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্কের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৮ জুলাই। এর মধ্যে চুক্তিতে পৌঁছানো না গেলে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক পুনরায় কার্যকর হতে পারে।
বিশেষ তথ্য:
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, বাংলাদেশ সর্বোচ্চ কূটনৈতিক যোগাযোগ ও দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছে। ২ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত ২৮ দফা বিভিন্ন মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, যা অন্য কোনো দেশ করেনি বলেও জানান তিনি।
এরইমধ্যে ইন্দোনেশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কঠিন শর্ত মেনে চুক্তিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে।