নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ (বিএমসি)–এর সহকারী অধ্যাপক ডাঃ ফারজানা মাকসুদ চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, “ওনারা আমাকে বরখাস্ত করতে পারে না, প্রয়োজনে আমি সুপ্রিম কোর্টে যাবো।” তিনি এই বরখাস্তের পেছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং ব্যক্তিগত আক্রোশ কাজ করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন।
গত ১৫ মে (বৃহস্পতিবার), বাংলাদেশ মেডিকেল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বিএমএসআরআই) এক অফিস আদেশে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আদেশটি জারি করেন প্রতিষ্ঠানটির অনারারি সেক্রেটারি ও ইসি সদস্য মেজর জেনারেল মোঃ রফিকুল ইসলাম (অবঃ)।
প্রতিবাদ ও অভিযোগ
বিকেলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনের সামনে সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিতে গিয়ে ডাঃ ফারজানা বলেন, “জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় আমি রাজপথে ছিলাম, ছাত্র ও সন্তানের মতো শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি—এই অপরাধেই আজ আমাকে এই শাস্তি পেতে হচ্ছে।”
তিনি দাবি করেন, বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী মাজহারুল ইসলাম দোলনের ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। বরখাস্তের আদেশ আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার না হলে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি “আওয়ামী দোসরদের মুখোশ উন্মোচনের” হুঁশিয়ারি দেন।
‘আদালতে যাবো, লড়াই করবো’
ডাঃ ফারজানা বলেন, “আমার শরীর থেকে এখনও রক্তের দাগ শুকায়নি। যারা আমাকে বরখাস্ত করেছে, তাদের কোনো নৈতিক অধিকার নেই। আমি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করবো এবং প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাবো।”
তিনি জানান, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে লিখিতভাবে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরবেন।
পেশাগত পরিচিতি ও গবেষণা
ডাঃ ফারজানা মাকসুদ ধানমন্ডিস্থ বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের এনাটমি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি এমবিবিএস ও এমফিল (এনাটমি) ডিগ্রিধারী এবং ২০১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিএমসি-তে যোগদান করেন। তার বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নম্বর: A 45985।
২০২৩ সালে তিনি “Conventional Frontal Air Sinus Imaging in Personal Identification among Adult Bangladeshi” শীর্ষক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন, যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশিদের ফ্রন্টাল এয়ার সাইনাসের গঠনগত বৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা করা হয়। এ গবেষণা ফরেনসিক সনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।